৪৮ ঘণ্টায় শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২১ মে, ২০২৫, ৫:২৯
৪৮ ঘণ্টায় শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টাঙ্গাইলে ‘ভোট চুরির’ অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা দায়েরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করেছেন বাদী।

বুধবার সকালে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা আমলি আদালতে বিএনপি নেতা ও বাদী কামরুল হাসান মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান। আদালতের বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম বাদী ও তার আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আবেদনটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান বলেন, “এতে মামলাটি আর চালানোর প্রয়োজন রইল না।”

এর আগে সোমবার ওই আদালতে দায়ের করা মামলায় ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকসহ মোট ১৯৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় স্থানীয় পাঁচ সাংবাদিকের নাম আসামি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জেলায় তীব্র প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়।

পরদিন মঙ্গলবার বাদী আদালতে পাঁচ সাংবাদিকের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে অনাপত্তিপত্র দাখিল করেন। পরবর্তী দিন বুধবার মামলাটিই সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করেন তিনি।

মামলার বাদী ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফার নির্দেশে মামলাটি প্রত্যাহার করেছেন তিনি। সিদ্ধান্তটি বিএনপির উপর মহল থেকে এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে ভূঞাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা জানান, মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি “শুনেছেন মাত্র”। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, মামলা দায়েরের বিষয়টি তার জানা থাকলেও, প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি অবগত নন। কেন মামলা দায়ের করা হলো এবং পরে কেন তা প্রত্যাহার করা হলো—এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান তিনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন বলেন, এ ধরনের মামলা দায়েরের আগে জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত ছিল। ডামি নির্বাচন ও ভোট চুরিতে যারা প্রকৃতভাবে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি, এ ধরনের মামলায় বাদীপক্ষের কোনো প্রকার ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য’ থাকতে পারে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন। মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে তিনি স্বাগত জানান।