আমি যুদ্ধবিরোধী, তবে প্রস্তুত থাকা আবশ্যক: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মহড়া পর্যবেক্ষণ করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলমান উত্তেজনা ও যুদ্ধের হুমকি বিবেচনায় যুদ্ধের প্রস্তুতি ছাড়া টিকে থাকা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী।’
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুগোপযোগী ও আধুনিক বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
‘আমি যুদ্ধবিরোধী, তবে প্রস্তুত থাকা আবশ্যক’
ড. ইউনূস বলেন,
আমি যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক—এটা আমরা কেউ চাই না। তবে বিশ্ব এখন এমন এক অনিশ্চিত জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে প্রস্তুতি ছাড়া থাকা সম্ভব নয়। যুদ্ধের প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধ ডেকে আনে, তাই এর বিরুদ্ধে আপত্তি থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার মতো অবস্থা আমাদের আশপাশেই আছে। আজকের খবরে দেখলাম—হয়তো গুজব—ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ আজই শুরু হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ‘আধা-আধি’ চলবে না। এ একমাত্র জয় বা পরাজয়ের লড়াই—জয়ই একমাত্র অপশন। সে প্রস্তুতি কতটা উচ্চ পর্যায়ে নিতে পারি, সেটা নিশ্চিত করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ।
বিমান বাহিনীর সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনীর মহড়া দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সাধারণত সিনেমায় এসব দৃশ্য দেখি। বাস্তবে দেখা খুব একটা হয় না। আজ আপনাদের কারণে সেটি বাস্তবে দেখার সুযোগ হলো। এতে শুধু যুদ্ধের সাহসই নয়, আমাদের ছেলেমেয়েদের দক্ষতা ও সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা দেখে বুক ভরে যায়।’
তিনি জানান, বিমান বাহিনী দেশের প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে আত্মনির্ভরতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সরকার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পেশাগত উন্নয়নে বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিচ্ছে।
অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় আছে। বিগত সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটে অর্থনীতির ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আমাদের সামগ্রিক স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে। শান্তির জন্য হাত বাড়িয়ে রাখতে হবে, কিন্তু একইসাথে প্রস্তুতও থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সামনে প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য যুদ্ধ-শান্তি ও নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আপনার মতামত লিখুন