কৃষকদের সাথে বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : 
প্রকাশ: ১৭ মে, ২০২৫, ২:৩৮
কৃষকদের সাথে বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময়

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদকে মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বরণ করে নেন কৃষকরা। ছবি - নিউজনেক্সট।

বাংলাদশ কৃষক সমিতি ঈশ্বরদীর আয়োজনে কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চল পাবনার ঈশ্বরদীতে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিজ আহমেদ এনডিসি। এ সময় দিনব্যাপী অস্থায়ী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।

শনিবার (১৭ মে) সকাল থেকে উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর গ্রামে জোয়াদ্দার মৎস্য খামার চত্বরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ঈশ্বরদী অঞ্চলের সাধারণ কৃষকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের কৃষক সমিতির সদস্যরা আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২৬ দফা সম্বলিত কৃষকদের বিভিন্ন দাবির আলোকে কৃষকদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করতে আসেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার।

সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই সভাস্থলে দিনব্যাপী অস্থায়ী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। কৃষি সমৃদ্ধ এই অঞ্চলকে উপস্থাপন করতে প্রবেশ মুখের মূল ফটকের দুই ধারা কৃষিপণ্য দিয়ে তৈরি করা হয় নান্দনিক প্রবেশ পথ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খোন্দকার আজিম আহমেদকে ফুল ও কৃষকের খেতে উৎপাদিত বিশাল আকৃতির একটি মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহজাহান, জেলা পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খান, জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. মনোয়ারুল হক, পজেটিভ ফাউন্ডেশনের সাবেক সভাপতি ডা. হোসাইন মো. আল-আমিনসহ স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব রাখেন, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ ওরফে কুল ময়েজ। লিখিত দাবি দাওয়া উপস্থাপন করেন শাহজাহান আলী বাদশা ওরফে পেঁপে বাদশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বলেন, এই কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চলে কৃষির গবেষণার জন্য একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন, সেটার জন্য আমরা সরকারের সাথে কথা বলো। একইসাথে এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে কৃষিঋনের ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে আমরা প্রস্তাবনা জানাবো। এই বছরে লিচুর ফলন ভালো হয়নি এখানে কৃষকের কিছুই করার নেই। তাই কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আপনাদের ন্যায় সঙ্গত দাবির বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে সরকারের কাছে তুলে ধরবো। আশা করছি বর্তমান সরকার আপনাদের দাবির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।

অনুষ্ঠানে সকাল থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাধারণ কৃষক পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করেন রাজশাহী ও ঢাকা থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। শিশু রোগ, মেডিসিন, অর্থপেডিক্স, চক্ষু, গাইনী ও দন্ত রোগে আক্রান্ত সেবাগ্রহিতাদের চিকিৎসকরা প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। একইসাথে অনেক রোগীকে ফ্রি ওষুধ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক আয়োজনে সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, পাবলিক হেলথ বিভাগ-জার্মান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও পজিটিভ প্লাস ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে ঈশ্বদী উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার কৃষক ও সেবাগ্রহীতার অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানকে নান্দনিক ও সৌন্দর্যবর্ধন করতে চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় ৩০ প্রকারের সবজি ও ফল দিয়ে তৈরি করা হয় অনুষ্ঠান স্থল।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ জানান, এই অঞ্চলের কৃষকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আগামী বাজেটে কৃষি বান্ধব বাজেট ঘোষনা, বিশ্বমানের একটি আধুনিক হাসপাতাল, কৃষি পণ্য সরবরাহের জন্য সরকারি বিআরটিসি পরিবহন সেবা, রেলগাড়িতে কৃষি পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা, কৃষি উপকরণ বিক্রি ও প্রাপ্তির জন্য নতুন করে ডিলার নিয়োগ, লিচু গবেষনাগারসহ বিমান বন্দর চালু করা প্রয়োজন।