নতুন অর্থবছরে শুল্ক-কর বাড়ানোর প্রস্তাব: যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু পণ্য ও সেবার উপর শুল্ক ও ভ্যাট হার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার (২ জুন) রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মোবাইল ফোন:
উৎপাদন ও সংযোজন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আংশিক কমিয়ে এর মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতে বাড়ানো হয়েছে ২.৫ শতাংশ করে ভ্যাট।
ধূমপানপণ্য:
সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক দ্বিগুণ করে ১৫০ শতাংশ থেকে ৩০০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
লিফট ও এলপিজি সিলিন্ডার:
স্থানীয় পর্যায়ে লিফট ও এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি আংশিক কমানো হয়েছে। লিফটের অব্যাহতি সুবিধা ২০৩০ সাল ও এলপিজির ক্ষেত্রে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও দাম বাড়তে পারে।
ইলেকট্রনিক ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স:
ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রিক ওভেন, ব্লেন্ডার, জুসার, আয়রন, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার, প্রেসার কুকারসহ ঘরোয়া পণ্যের ভ্যাট অব্যাহতি আংশিক কমিয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দামও সামান্য বেড়ে যেতে পারে।
ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার:
স্থানীয় উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি কমিয়ে দিলেও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।
সাবান ও শ্যাম্পু:
কাঁচামালের উপর ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা কমানো হয়েছে, তবে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত।
রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, কম্প্রেসর:
স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। দাম বাড়তে পারে এই পণ্যগুলোর।
আমদানিকৃত কিছু পণ্য:
সার্জিকাল পণ্য, টিভি সেট টপ বক্স এবং বলপয়েন্ট কলম আমদানির সময় ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্মাণ ও ইস্পাত খাত:
হালকা ইস্পাত উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট কর ২০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নির্মাণ সংস্থাগুলোর সেবায় ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অনলাইন ব্যবসা:
অনলাইনে পণ্য বিক্রির ওপর কমিশনে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব আনা হয়েছে।
কাগজজাত পণ্য:
সেল্ফ কপি পেপার, ডুপ্লেক্স বোর্ড ও কোটেড পেপারে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশের প্রস্তাব।
প্লাস্টিক সামগ্রী:
টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, হাইজেনিক ও টয়লেট সামগ্রীর ভ্যাট হার দ্বিগুণ করে ৭.৫ থেকে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বস্ত্র শিল্প:
কটন সুতা ও কৃত্রিম আঁশের ইয়ার্ন উৎপাদনে সুনির্দিষ্ট করহার ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
দৈনন্দিন পণ্য:
ব্লেডের উপর ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।
তারের কাটা, নাট-বল্টু, স্ক্রু, কানেক্টর, ইলেকট্রিক হার্ডওয়্যার, পোল ফিটিংস ইত্যাদির উপরও ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এই প্রস্তাবিত বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ৩০ জুন। নতুন অর্থবছর শুরু হবে ১ জুলাই থেকে। প্রস্তাবিত শুল্ক-ভ্যাট হার কার্যকর হলে বহু ভোগ্য ও দৈনন্দিন পণ্যের বাজারে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন : বাজেট ঘোষণা আজ, সতর্ক পদক্ষেপের ইঙ্গিত
আপনার মতামত লিখুন