মুকসুদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, একজন আটক

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১১ জুন, ২০২৫, ৫:২৮
মুকসুদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, একজন আটক

মৌসুমি ফল পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে মাদারীপুর-গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলার শিকার হয়েছেন মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের পাঁচ নেতা। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার টেকেরহাট উত্তরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের অভিযোগ, একটি রেস্টুরেন্টের সামনে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় একটি বাস পরিবহনের শ্রমিক ও তাদের সহযোগীরা তাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত পাঁচজনকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ হতাহতের বাড়িতে মৌসুমি ফল পৌঁছে দিয়ে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার কাশিমপুর থেকে শহরে ফিরছিলেন ছাত্র-আন্দোলনের নেতারা। পথে রাত ৮টার দিকে টেকেরহাট উত্তরপাড়ের ‘বরিশাল গেট চাইনিজ ও বাংলা রেস্টুরেন্ট’-এ বিরতির সময় মিজান পরিবহনের স্টাফরা আন্দোলনের নারী সদস্যদের ইভটিজিং করে বলে অভিযোগ ওঠে।

প্রতিবাদ করায় শুরু হয় বচসা ও হাতাহাতি। এরপর রেস্টুরেন্টের সামনে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায় বাসের স্টাফ ও তাদের লোকজন। এতে আহত হন সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আশিকুর রহমান হৃদয়, যুগ্ম সদস্য সচিব আশিকুর তামিম আশিক, যুগ্ম আহ্বায়ক মিথিলা ফারজানা নীলা, কিরণ আক্তারসহ পাঁচজন।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অখিল সরকার জানান, আহতদের মধ্যে দুইজনকে ভর্তি করা হয়েছে, আর তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে হামলাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ দাবি করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ বলেন, “এই হামলার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে এবং অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনার পর একজনকে আটক করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।”

আহত কিরণ আক্তার বলেন, “মেয়েদের ওপর এভাবে হামলা চালাবে, তা ভাবতেও পারিনি। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদেই এই ঘটনা। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”

ঘটনার পর মিজান পরিবহনের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।