বানারীপাড়ায় ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ফিল্মি ষ্টাইলে নারী শিক্ষার্থীকে অপহরণ, নির্বিকার পুলিশ

তামজিদ নুসায়ের মিরন ও সালমান খান হৃদয়
বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর এলাকায় বখাটে যুবক সালমান খান হৃদয় ও চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ নুসায়ের মিরন সরদারের নেতৃত্বে চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে ফিল্মি ষ্টাইলে অপহরন করা হয়েছে।
সূত্র মতে, ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টায় উপজেলার সলিবাকপুর ইউনিয়নের শাখারিয়া গ্রামের চান্দু মোল্লার বাড়ির সামনের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। দিনে-দুপুরে ওই অপহরনের ঘটনায় এলাকায় সাধারন মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় ১০ জুলাই সন্ধ্যায় ওই স্কুল ছাত্রীর মা সাথী আক্তার বাদী হয়ে বখাটে সালমান খান হৃদয় ও চাখার সরকারী ফজলুল হক কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ নুসায়ের মিরন সহ ৫ জন নামধারী ও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করে বানারীপাড়া থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেছেন।
হৃদয় উপজেলার মাদারকাঠী গ্রামের ছালামের ছেলে ও মিরন সরদার চাখার ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির সরদারের ছেলে।
এ ব্যাপারে অপহৃত স্কুল ছাত্রীর মা সাথী আক্তার জানান,তার মেয়ে চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর ছাত্রী। দীর্ঘদিন যাবত স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে বখাটে সালমান খান হৃদয় তার ১০ম শ্রেনীর পড়ুয়া মেয়ে(১৪) কে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ইভটিজিং, প্রেম নিবেদন সহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলো।
এ কারনে তিনি বিগত ৭/৮ মাস পূর্বে হৃদয়ের বরিশাল আদালতে একটি এমপি মামলা করেন। মামলা নং ১০৩৮। পরে আদালতে উপস্থিত হয়ে হৃদয় আর কখনো ওই ছাত্রীকে ডিস্ট্রাব করবেনা এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পায়। আদালত থেকে মুচলেকা দিয়ে আসার পরেও হৃদয় তার বখাটে কিছু বন্ধু বান্ধব নিয়ে তার মেয়েকে আবার একই ভাবে পথে ঘাটে ইভটিজিং ও কুপ্রস্তাব দিতে থাকলে ওই ছাত্রীর নানা জাহাঙ্গীর মিয়া এ ব্যপারে বিচার দিলে বখাটে হৃদয় ও তার পিতা ছালাম জাহাঙ্গীর মিয়াকে উল্টো মারধর করে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়।
এসব কারনে তিনি নিরাপত্তার জন্য মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যেতেন আবার নিয়ে আসতেন। ঘটনার দিন দুপুর ২ টায় ওই ছাত্রীর ১০ম শ্রেনীর মুল্যায়ন পরীক্ষা শেষে ভাইগ্না কাওসারের মোটরসাইকেলে করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সলিয়াবাকপুরের শাখারিয়া গ্রামের চান্দু মোল্লার বাড়ির সামনের রাস্তায় পৌছামাত্র সেখানে পূর্বে থেকে সিএনজি ও অটোগাড়ি নিয়ে ওৎ পেতে থাকা হৃদয় ও তার বখাটে বন্দু চাখার সরকারী ফজলুল কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ নুসায়ের মিরন সরদার,শাওন,ফাহিম সিকদার,ইমন সিকদার সহ ৫/৭ জন দুবৃত্ত মিলে মটরসাকেলের গতিরোধ করে মারধর করে টেনে-হিচরে তার মেয়েকে সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরন করে নিয়ে যায়।
এ সময় বাধা দিলে কাওসারকে ও মারধর করে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক সিএনিজিতে তুলে নিয়ে চলে যায়। এ সময় কাওসারের মোটরসাইকেলের চাবিও নিয়ে যায় ওই দুবৃত্তরা।
অপহরনের ঘটনা এলাকার লোকজন দেখলেও কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েকে সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।খবর পেয়ে একটু সামনে ওই ছাত্রীর ফুপা মোস্তফা মোল্লা ও ফুপু রুনু বেগম বাধা দিলে তাদেরকে ও মারধর করে চলে যায়।
ওই ছাত্রীর মা সাথী আক্তার ও তার ভাগ্নে কাওছার জানান, অপহরনে হৃদয়ের সাথে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছে মিরন সরদার।
এ ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় স্কুল ছাত্রীর মা সাথী আক্তার বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেছেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পুলিশের নির্বিকার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
এ বিষয় বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোস্তফা জানান, স্কুল শির্ক্ষার্থী অপহরনের ঘটনায় ওইদিন রাতেই একটি অপহরন মামলা নেয়া হয়েছে। ওসি আরও বলেন, আসামিদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ। তবে সকল আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, বরিশাল জেলা ছাত্রদল ইতিমধ্যে তামজিদ নুসায়ের মিরনকে পদ থেকে বহিস্কার করেছে।
আপনার মতামত লিখুন