ফেনীতে জামিনের পর বারবার গ্রেফতার: জেল সুপারকে আদালতের তলব

আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফেনী :
প্রকাশ: ৩০ জুলাই, ২০২৫, ৬:৩১
ফেনীতে জামিনের পর বারবার গ্রেফতার: জেল সুপারকে আদালতের তলব

ফেনী জেলা কারাগারের মূল ফটক থেকে জামিনপ্রাপ্ত একজন আসামিকে একাধিকবার নতুন মামলায় গ্রেফতারের ঘটনায় ফেনীর জেল সুপার মো. আবদুল জলিলকে তলব করেছেন আদালত।

সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেলে ফেনী সদর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশে বলা হয়, বিষয়টি উদ্বেগজনক, বেআইনি এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।

জানা গেছে, বারবার গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম সুফিয়ান। গত ১৯ এপ্রিল তিনি গ্রেফতার হন। এরপর ২৪ জুন একটি মামলায় দায়রা আদালত থেকে জামিন পান। তবে ২৫ জুন কারাগার থেকে বের হওয়ার সময়ই জেল গেট থেকে আরেকটি মামলায় পুনরায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পরবর্তীতে, ওই মামলায় জামিন পেয়ে ৩ জুলাই কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার সময় আবারও ফটক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সবশেষ ২৭ জুলাই জামিনে মুক্ত হওয়ার পর শহরের হাসপাতাল মোড় থেকে তাকে ফের একটি মামলায় আটক দেখানো হয়।

জেল সুপারের বিরুদ্ধে ঘুষ চেষ্টার অভিযোগ

সুফিয়ানের আইনজীবীর অভিযোগ, জামিননামা পৌঁছানোর পর জেল সুপার তাকে মুক্তি দিতে গড়িমসি করেন এবং ঘুষ দাবি করেন। টাকা না দিলে কথিত এক দালালের মাধ্যমে লেনদেনের চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটকে ফোন করে পুনরায় গ্রেফতারের ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

আদালতের ফরওয়ার্ডিংয়ে উল্লেখ করা হয়, একই ব্যক্তি বা অন্য জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের অনিয়মিতভাবে জেল গেট থেকে গ্রেফতারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এসব ঘটনা জেল সুপারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও অসদাচরণের ইঙ্গিত দেয়।

আদেশে বলা হয়, কেন এই বেআইনি ঘটনার দায়ভার জেল সুপারের ওপর বর্তাবে না এবং কেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা ব্যাখ্যা করতে আগামী ৩১ জুলাই সকাল ১১টায় তাকে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়া

ফেনী কোর্ট পুলিশের ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, জেল গেট থেকে একই ব্যক্তিকে বারবার গ্রেফতারের ঘটনায় আদালতের তলবের বিষয়ে মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এখনো আদেশের কপি হাতে পাইনি।

অন্যদিকে ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আবদুল জলিল বলেন, আদালত যেকোনো সময় তলব করতে পারেন। তবে আমি কাউকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেইনি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঙ্গে আমি জড়িত নই।

ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।