ইমনের ঝড়ো সেঞ্চুরি ও পেসারদের নৈপুণ্যে বড় জয় পেল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২৫, ৪:৪০
ইমনের ঝড়ো সেঞ্চুরি ও পেসারদের নৈপুণ্যে বড় জয় পেল বাংলাদেশ

১৯২ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত লড়াই করে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। একপর্যায়ে ম্যাচ নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল টাইগার শিবিরে। তবে শেষ পর্যন্ত তিন পেসার—মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২৭ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

শনিবার (১৭ মে) শারজাহতে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে নতুন অধিনায়ক লিটন দাসের পূর্ণাঙ্গ নেতৃত্ব যাত্রা শুরু হয়।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ৭ উইকেটে ১৯১ রান। এই বিশাল স্কোরের পেছনে মূল কৃতিত্ব পারভেজ হোসেন ইমনের। বাঁহাতি এই ওপেনার মাত্র ৫৪ বলে ১০০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৫টি চার ও ৯টি ছক্কা। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এবং সবচেয়ে দ্রুততম।

ইমন ২৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর পরবর্তী ২৫ বলে পৌঁছে যান শতকে। তার ৯টি ছক্কার ইনিংসটি এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার নতুন রেকর্ড।

এদিন ভাগ্যও ছিল ইমনের সহায়। ১৭তম ওভারে ৮৪ রানে থাকা অবস্থায় ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান নো বলের কারণে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। তবে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই আউট হন ২০তম ওভারের প্রথম বলে।

ইমনের পর বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান এসেছে অতিরিক্ত খাত থেকে—২১। তাওহিদ হৃদয় ১৫ বলে ২০ রান করেন। লিটন দাস ৮ বলে ১১ রান করে আউট হন।

বাংলাদেশ ইনিংসে মোট ১৩টি ছক্কা এসেছে, যা দলটির টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ। এর আগে ১২টি করে ছক্কার ইনিংস ছিল দুবার—২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০ ওভার খেলে ১৬৪ রানে অলআউট হয়। ম্যাচের একপর্যায়ে তারা ছিল ১৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩১ রান। জয় তখন হাতের নাগালেই ছিল। শেষ ৪২ বলে মাত্র ৬১ রান দরকার ছিল, হাতে ছিল ৭ উইকেট।

কিন্তু ঠিক তখনই দৃশ্যপট পাল্টে দেন বাংলাদেশের পেসাররা। ধারাবাহিকভাবে উইকেট তুলে নিয়ে তারা ম্যাচ নিজেদের দিকে নিয়ে আসেন।

আমিরাতের ওপেনার ও অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম ৩৯ বলে ৫৪ রান করেন, মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা। চার নম্বরে নামা রাহুল চোপড়া করেন ২২ বলে ৩৫।

পাঁচে নামা আসিফ খান বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ২১ বলে ৪ ছক্কা ও ৩ চারে করেন ৪২ রান। ১৯তম ওভারে তাকে ফিরিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন হাসান মাহমুদ।

শেষদিকে আমিরাতের ৫ উইকেট পড়েছে মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে।

বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন। মোস্তাফিজ ছিলেন দুর্দান্ত, ১৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। তানজিম হাসান সাকিবও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। শেষ ওভারে ২ উইকেট তুলে নেন শেখ মেহেদী হাসান, আরেকটি উইকেট যায় তানভীর ইসলামের ঝুলিতে।

এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসে আমিরাতের বাঁহাতি পেসার মুহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহ ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন। এছাড়া ধ্রুব পরাশর, মুহাম্মদ জুহাইব ও মতিউল্লাহ খান নেন একটি করে উইকেট।

এই জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সোমবার (১৯ মে) একই ভেন্যু শারজাহতে।