কক্সবাজার রেলস্টেশনে যুক্তরাষ্ট্রের স্ক্যানার, মাদক ও অস্ত্র শনাক্তে সক্ষম

জাফর আলম,কক্সবাজার:
প্রকাশ: ৪ আগস্ট, ২০২৫, ১২:১৮
কক্সবাজার রেলস্টেশনে যুক্তরাষ্ট্রের স্ক্যানার, মাদক ও অস্ত্র শনাক্তে সক্ষম

দেশের রেলপথে নিরাপত্তায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন। সেখানে বসানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ ব্র্যান্ডের অত্যাধুনিক স্ক্যানার, যা মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালানি পণ্য শনাক্তে সক্ষম। এটি দেশের প্রথম রেলস্টেশন, যেখানে যাত্রীদের ব্যাগ স্ক্যান করার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ওঠার আগে যাত্রীরা স্ক্যানার মেশিনে নিজেদের লাগেজ রাখছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে স্ক্যানিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাগ খুলে তল্লাশি করা হচ্ছে। যাত্রীরা এতে সহযোগিতা করছেন, বিরক্তি প্রকাশের নজির নেই।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কক্সবাজার থেকে মাদক ও অবৈধ পণ্য পাচারের হার বেড়েছে। এ প্রেক্ষিতে ট্রেনভিত্তিক অপরাধ দমন ও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতেই স্ক্যানার চালু করা হয়েছে।

টিকিট কালেক্টর শান্ত বড়ুয়া বলেন, “এই মেশিনটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি। এটি ওষুধজাত দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র, মাদকসহ চোরাই বস্তু শনাক্ত করতে পারে। হয়রানি যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি।” যাত্রীদের ট্রেন ছাড়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে আসার পরামর্শও দেন তিনি।

রেলস্টেশনের মাস্টার মো. গোলাম রব্বানী জানান, কক্সবাজার ছাড়াও চট্টগ্রাম ও ঢাকায় স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে। তবে কক্সবাজারেই এটি নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে। র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীও নিরাপত্তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত।

নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীরাও সন্তুষ্ট। অনেকে বলেন, “নিরাপত্তার স্বার্থে স্ক্যানিং প্রয়োজনীয়। তবে যেন অপ্রয়োজনে কেউ হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।”

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, এই স্ক্যানিং পদ্ধতি শুধু নিরাপত্তা নয়, বরং মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয় কক্সবাজার রেললাইনে। বর্তমানে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ও ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’, আর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে চলছে ‘সৈকত এক্সপ্রেস’ ও ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’।