ভোলায় দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে যুবদল-ছাত্রদলের সাত নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ফাইল ছবি।
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলা শ্রমিক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের সাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) তজুমদ্দিন থানায় দায়ের করা এই মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাব্বত খান। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২৯ জুন) রাতের বেলায়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ঢাকায় থাকেন এবং দুই স্ত্রীর একজনের বাসায় বেড়াতে আসেন। শনিবার রাতে ওই বাড়িতে অবস্থানকালে উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন, এবং তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাসেল আহমেদসহ ৫–৬ জন সশস্ত্র অবস্থায় ঘরে প্রবেশ করে তাঁকে মারধর করে। একপর্যায়ে তাঁরা আর্থিক চাঁদা দাবি করে ও নির্যাতন চালায়।
পরদিন রোববার সকালে প্রথম স্ত্রী ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও রড ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে স্বামীকে ঘর থেকে বের করে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পর ওই গৃহবধূকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
নারীটি বলেন, তিনি চিৎকার করলে বাড়ির আশপাশের নারীরা দরজা খোলার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরে তাঁরা বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পুলিশের জাতীয় হেল্পলাইন ৯৯৯-এ কল করে ঘটনাটি জানানো হয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ সোমবার মামলা রুজু করে এবং তদন্ত শুরু করে। মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রধান আসামি ফরিদ উদ্দিন ও যুবদল কর্মী আলাউদ্দিন পলাতক। অভিযুক্তদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
তবে অভিযুক্তরা ঘটনার সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। ছাত্রদল নেতা রাসেল আহমেদ দাবি করেন, ঘটনাস্থলে আমি থাকি না, আমাকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়েছে। একই ধরনের দাবি করেন মামলার আরেক আসামি জয়নাল আবেদীনও।
তজুমদ্দিন থানার ওসি মহাব্বত খান বলেন, ভুক্তভোগীর স্বামীর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন