নওগাঁ সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের প্রতিবাদ

সিয়াম সাদিক ,বগুড়া ব্যুরো :
প্রকাশ: ৩০ জুলাই, ২০২৫, ১১:৩৪
নওগাঁ সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের প্রতিবাদ

নওগাঁ সড়কে আলু ফেলে কৃষকদের প্রতিবাদ

“এক কেজি আলু কৃষকের এক ফোটা রক্ত, খরচ হিমাগারে মূল্য নেই বাজারে, ২৮ টাকায় ফলিয়েছি স্বপ্ন, ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কান্না, রপ্তানি বাড়াও কৃষক বাঁচাও” লেখা নানা শ্লোগানের ব্যানার নিয়ে রাস্তায় নেমেছে নওগাঁর আলু চাষিরা। সরকার কর্তৃক ধান-গমের মতো আলুরও নায্য মূল্য নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আলু চাষিরা।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার কৃষক পরিবার এবং আলু ব্যাবসায়ী পরিবারের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

কৃষকরা বলেন, বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেকেরও নিচে। প্রতি কেজি আলুতে ১৭-১৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংক এবং এনজিও থেকে ঋণ করে আলু চাষ করায় বাজারে দাম না পয়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন আলু চাষিরা।

নওগাঁ সদর উপজেলার চকবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, সার ফসফেটের দাম দাম অনেক বেশি সেই হিসাবে শুরু থেকেই এবছর আলুর দাম নাই। খরচের টাকায় উঠছে না। ধান চালের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করতে পারলে আলুর কেনো হবে না? সরকারের কাছে দাবি জানাই দ্রুত আলুর মূল্য যেনো নির্ধারণ করে দেয়।

সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের আরেক কৃষক বুলবুল ইসলাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি চালের দামও বেশি। কিন্তু আলুর কোন দাম নাই। হিমাগারেও খরচ বেশি নেওয়া হচ্ছে। এক মণ আলু চাষ করতেই ১২০০-১৩০০ টাকা করে খরচ হয়েছে। বাজারে এখন আলু বিক্রিই করতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা মণ। তাহলে আমরা যাবো কোথায়? সরকার যদি আমাদের জন্য কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।

শহরের বালুডাঙ্গা এলাকার আলু চাষি সাইফুল আলম বলেন, গরু বিক্রি করে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আলু চাষ করেছিলাম। কিন্তু বাজারে এখন আলু বিক্রি হচ্ছে না। হিমাগারে প্রতি কেজি আলুতে আগের থেকে ৪ টাকা করে বেশি দিতে হচ্ছে। এক কেজি আলু উৎপাদনসহ হিমাগারে রাখতে ২৫-২৬ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজারে পাইকারি দরে ১১-১২ টাকার বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না। ঋণের টাকা পরিশোধ করা তো দূরের কথা খরচের টাকা উঠানো নিয়েই এখন চিন্তার মধ্যে আছি।

এ বিষয়ে নওগাঁ কৃষি অধিদপ্তরের বিপণন কর্মকর্তা সোহাগ সরকার বলেন, এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় আলুর উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। বছরের এই সময়টাতে অন্যান্য সবজি বাজারে বেশি থাকায় মানুষ আলু কম কিনে। সরকারের পক্ষ থেকে ওএমএস অথবা টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।