পুরোনো যুদ্ধবিমান দিয়ে প্রশিক্ষণ আত্মঘাতী অবহেলা: সাইফুল্লাহ খান সাইফ

উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন নিহতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ।
২১ জুলাই এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভিন্ন তারিখ, ভিন্ন নাম—কিন্তু একই গল্প। আবারও প্রাণ গেল এক প্রতিশ্রুতিশীল পাইলটের, তাও যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ বিমানে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ৯ মে স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ একইভাবে একটি ত্রুটিপূর্ণ বিমানে প্রাণ হারিয়েছিলেন। এবার প্রাণ গেল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাওকির ইসলাম সাগরের। তাদের শেষ মুহূর্তের বীরত্ব রক্ষা করেছে অনেক জীবন, কিন্তু নিজের জীবন তাঁরা বাঁচাতে পারেননি।
সাইফ বলেন, ‘প্রশ্ন উঠছে—১৯৬৬ সালের প্রযুক্তির বিমানে কি আমরা এখনো প্রশিক্ষণ দেব? প্রতিটি ফ্লাইট যদি হয়ে ওঠে মৃত্যুর জুয়া, তবে তা কি কেবল দুর্ঘটনা, না রাষ্ট্রীয় অবহেলা?
তিনি কটাক্ষ করে বলেন, বাংলাদেশের আকাশে এখনো উড়ছে সত্তর দশকের ভাঙারি যুদ্ধবিমান। যেগুলো আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে অচল তো বটেই, প্রশিক্ষণের জন্যও অযোগ্য। বিশ্বের বহু দেশ বহু আগেই এসব বাতিল করেছে, অথচ আমরা এখনো সেগুলো তুলে দিচ্ছি তরুণ পাইলটদের হাতে।
বিবৃতিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন—এই মৃত্যু কেবল যান্ত্রিক ত্রুটির ফল, নাকি প্রতিরক্ষা বাজেটের অপব্যবহার, অব্যবস্থাপনা ও দায় এড়ানোর সংস্কৃতির নিষ্ঠুর প্রতিফলন?
তিনি বলেন, একজন পাইলট তৈরি করতে সময়, মেধা, বাজেট সবকিছুই লাগে অনেক। আর সেই জীবনকে আমরা ঠেলে দিচ্ছি ঝুঁকির মুখে পুরোনো প্লেন আর ব্যর্থ ব্যবস্থাপনার হাতে তুলে দিয়ে। এই দায় কোনো মেইনটেন্যান্স টিমের নয় এই দায় সিদ্ধান্তপ্রণেতাদের, বাজেটদাতাদের, তদারকির দায়িত্বে থাকা সবার।
তিনি আরও বলেন, এই মৃত্যুতে হাসপাতাল পরিদর্শন, সহানুভূতি প্রকাশ, সামান্য আর্থিক সহায়তা এসব আমরা আগেও দেখেছি। তারপর আবারও একই ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন হলো—এই বৃত্ত থেকে আমরা কখন বের হব?
বিবৃতির শেষভাগে তিনি জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখনই প্রয়োজন প্রতিরক্ষা বাজেটের পূর্ণ অডিট, কার্যকারিতা বিশ্লেষণ এবং প্রকৃত উন্নয়নে বিনিয়োগ। প্রশিক্ষণ যেন আর কারও জীবনের শেষ অধ্যায় না হয়।
আপনার মতামত লিখুন