প্রবাসীদের ঐক্যই পরিবর্তনের শক্তি: ফিনল্যান্ডে এনসিপি আহ্বায়ক আহাদ শিকদার

কাজী সোলায়মান সুমন, ঝালকাঠি:
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ৩:৪১
প্রবাসীদের ঐক্যই পরিবর্তনের শক্তি: ফিনল্যান্ডে এনসিপি আহ্বায়ক আহাদ শিকদার

ফিনল্যান্ড এনসিপির আহ্বায়ক আহাদ শিকদার

‘প্রবাসীদের ঐক্যই হবে পরিবর্তনের শক্তি’—ফিনল্যান্ডে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক আহাদ শিকদারের কণ্ঠে উচ্চারিত এই আহ্বান যেন নতুন প্রজন্মের প্রত্যয়ের প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অর্থপাচার, গুম-খুনসহ কোনো অপরাধ আর সহ্য করা হবে না।

প্রবাসীদের ঐক্য ও তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগিয়েই গড়ে তোলা হবে একটি স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক ও উন্নত বাংলাদেশ। এক সাক্ষাৎকারে আহাদ শিকদার জানান, প্রবাসে থেকেও দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ রয়েছে। কেবল কথায় নয়, কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করা হবে যে বিদেশের মাটিতেও দেশের জন্য সংগ্রাম চালানো সম্ভব। তিনি বলেন, ফিনল্যান্ডসহ ইউরোপজুড়ে এনসিপির কার্যক্রম ছড়িয়ে দিয়ে প্রবাসীদের রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় করা হবে, যাতে তারা দেশের পরিবর্তনের সহযোদ্ধা হতে পারেন।

২০২৪ সালের জুলাই মাসের আন্দোলনে প্রবাস থেকে সরব হয়ে ওঠেন আহাদ শিকদার। হেলসিঙ্কির পার্লামেন্ট ভবনের সামনে শতাধিক প্রবাসীকে সংগঠিত করে তিনি উচ্চারণ করেন—“ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাই।” সে কর্মসূচি শুধু একটি সমাবেশ ছিল না; বরং প্রবাসীদের হৃদয়ে নতুন করে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে। ব্যানার-লিফলেট তৈরি থেকে শুরু করে স্লোগানধ্বনি তদারকি—সবকিছুতে তিনি ছিলেন সরাসরি সম্পৃক্ত।

জুলাই-আগস্ট জুড়ে তিনি আয়োজন করেন বিভিন্ন কর্মসূচি, আর্থিক সহায়তা দেন আন্দোলনরত কর্মীদের এবং ইউরোপজুড়ে আন্দোলনের সমন্বয় করেন। আহাদ শিকদার ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গলুয়া গ্রামের মো. সালাম শিকদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি ফিনল্যান্ডের LAB University of Applied Sciences-এ Sustainable Solution Engineering বিষয়ে পড়াশোনা করছেন এবং খণ্ডকালীন চাকরি করছেন।

গত ২৬ জুলাই এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি ফিনল্যান্ডে ছয় মাস মেয়াদি ৩১ সদস্যের একটি কমিটি অনুমোদন করে। এতে আহাদ শিকদারকে আহ্বায়ক, জাহিদ হাসানকে যুগ্ম আহ্বায়ক, আলমগীর হোসেনকে সদস্য সচিবসহ কয়েকজনকে বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়। আহাদ শিকদারকে “বিপ্লবী নেতা” হিসেবে অভিহিত করেছেন ঝালকাঠি এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাইনুল ইসলাম মান্না।

এনসিপির ডেপুটি চিফ অর্গানাইজার ডা. মাহমুদা আলম মিতু বলেন, ফিনল্যান্ড কমিটি প্রবাসীদের আরও সংগঠিত করবে এবং রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। তিনি আহাদ শিকদারের বিদেশে থেকেও জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও ডায়াস্পোরা কো-অর্ডিনেটর দিলশানা পারুল বলেন, প্রবাসীরা কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তি।

তাদের লক্ষ্য হলো প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের প্রথম দাবি হচ্ছে—আওয়ামী লীগের দুঃশাসন চলাকালে সংঘটিত গণহত্যা ও সব অপকর্মের বিচার নিশ্চিত করা। এরপর প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে হবে। শহীদদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।”