প্রবাসীর স্ত্রী ও মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন, দেবরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লোহাগাড়া থানা, ইনসেটে অভিযুক্ত।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীর স্ত্রী ও কন্যার ওপর চরম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ভুক্তভোগীর দেবর মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল আজিজুর রহমান, তার স্ত্রী এবং দুই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের কালোয়ার পাড়ায়। প্রবাসীর স্ত্রী শিবলু আক্তার ও তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস গুরুতর আহত হন। ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিবলু আক্তার স্বামীর সঙ্গে দুবাইতে বসবাস শেষে কিছুদিন আগে দেশে ফেরেন। শ্বশুরবাড়িতে পৃথকভাবে থাকার পাশাপাশি আলাদা রান্নাঘর ব্যবহার করছিলেন। ঘটনার দিন তার ব্যবহৃত রান্নাঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর শুরু করেন অভিযুক্ত দেবর আব্দুল আজিজ। প্রতিবাদ করায় তিনি শিবলুর ওপর নির্মমভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, আত্মীয় নাঈমা সোলতানা ও ভাগ্নে জমির উদ্দিনও মারধরে যোগ দেন।
ভুক্তভোগী শিবলু আক্তার জানান, ‘‘আমার স্বামীর কষ্টের টাকায় কেনা জায়গায় নির্মিত বাড়িতে আমরা থাকলেও শান্তিতে বসবাস করতে পারছি না। আজিজ দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিয়ে আসছিল, পাত্তা না দেওয়ায় প্রতিশোধ নিতে এমন নৃশংস হামলা চালিয়েছে। আমাকে লোহার রড ও ছুরি দিয়ে মাথা, নাক ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করেছে। এমনকি সিজারের সেলাইয়ের স্থানেও আঘাত করে। ভিডিও ধারণ করায় আমার মেয়েকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।’’
লোহাগাড়া থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্তরা হলেনঃ আব্দুল আজিজুর রহমান (২৮) তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা (২২), নাঈমা সোলতানা (২২), জমির উদ্দিন (৩০)। সকলেই ভুক্তভোগীর আত্মীয় ও একই বাড়ির বাসিন্দা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ মিঞা ও সালিশকার আজিজুল মিন্টু বলেন, প্রবাসী ওছমানের টাকায় নির্মিত বাড়িতে তার স্ত্রী ও সন্তানরাই আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তারা আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না। আমরা দ্রুত ও কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ছাদেক বলেন, মা-মেয়েকে গুরুতর আহত অবস্থায় আনা হয়। শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, মা শিবলুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আপনার মতামত লিখুন