রাজশাহীতে ১২৩ জনের চাঁদাবাজির তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

সজল মাহমুদ, রাজশাহী :
প্রকাশ: ২৯ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫৫
রাজশাহীতে ১২৩ জনের চাঁদাবাজির তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

রাজশাহীতে ১২৩ জনের নামসহ একটি চাঁদাবাজির তালিকা প্রকাশকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই তালিকাকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করছেন, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত প্রশাসনিক উদ্যোগ, যার লক্ষ্য বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে বিতর্কিত করা।

রোববার (২৭ জুলাই) রাজশাহীতে এক সংবাদ সম্মেলনে নগরীর বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা বিএনপির সভাপতি শামছুল হোসেন মিলু বলেন, ১২৩ জনের যে তালিকাটি ঘুরছে, সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি। সেখানে বোয়ালিয়া থানার ওসির স্বাক্ষর রয়েছে। এটা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রশাসনের নির্দেশে তৈরি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এভাবে বিরোধী দলকে দমন করতেই ভুয়া মামলার আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে।

তালিকায় নাম থাকা ছাত্রদল নেতা ও রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব এমদাদুল হক লিমন বলেন,

এই তালিকায় প্রকৃত অপরাধীদের পাশাপাশি নিরীহ, রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিদের নামও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করাই এর মূল উদ্দেশ্য।

তিনি প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া না এলেও, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) গাজিউর রহমান বলেন, যে তালিকার কথা বলা হচ্ছে, সেটি আমি সুনির্দিষ্টভাবে জানি না। তবে সাধারণত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে, যা পরে পুলিশ যাচাই-বাছাই করে। অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই—অপরাধী অপরাধীই।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, এই তালিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিছু দোষী থাকতে পারে, কিন্তু একসঙ্গে ১২৩ জনকে অভিযুক্ত করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত। তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের একটি অংশ দেশে পুনরায় দমনমূলক শাসন কায়েমের চেষ্টায় লিপ্ত।

এদিকে তালিকায় নাম উঠে আসা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে রাজশাহী মহানগর জামায়াতও। দলটির সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, তালিকায় যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখতে।

চাঁদাবাজির এই তালিকা ঘিরে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে স্পষ্টভাবেই আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।

সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় এই ইস্যুটি আরও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে।

এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কতটা স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে এই বিতর্কের অবসান ঘটাতে পারে।