শিশু জুঁই হত্যার পুনঃতদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১৫ মে, ২০২৫, ২:৫০
শিশু জুঁই হত্যার পুনঃতদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা মমিনা খাতুন। ছবি - এম এস রহমান / নিউজনেক্সট

নাটোরের বড়াইগ্রামে ৮ বছরের শিশু জুঁই হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

বুধবার (১৪ মে) বড়াইগ্রাম উপজেলার গারফা উত্তরপাড়া গ্রামে জুঁইয়ের বাড়ির সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বড়াইগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহবুব সরদার, সংগঠনের নেতা নুহু ইসলাম ও পাবনা জেলার নেতা কিবরিয়া হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা মামুন আল হাসান, জিয়াউর রহমান মাস্টার, পল্লী চিকিৎসক হাসান আলী, নিহত জুঁইয়ের মা মমিনা খাতুন ও দাদী জহুরা খাতুনসহ অনেকে।

বক্তারা অভিযোগ করেন, শিশু জুঁই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে এবং প্রকৃত আসামিদের আড়াল করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে শুধুমাত্র সিয়াম এই ঘটনায় সম্পৃক্ত বলে ধারণা করছেন জুঁইয়ের পরিবার ও এলাকাবাসী। তারা মনে করেন, সিয়ামকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত অপরাধীদের নাম প্রকাশ পাবে। তাই মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ এপ্রিল নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ১৫ এপ্রিল সকালে চাটমোহর উপজেলার রামপুর বিলে একটি ভুট্টা ক্ষেতে শিশু জুঁই খাতুনের বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মুখে পোড়া দাগসহ নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল।

নিহত জুঁই বড়াইগ্রাম উপজেলার গারফা উত্তরপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়াপ্রবাসী জাহিদুল ইসলামের মেয়ে ও আজেদা নূরানী কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ঘটনার পরদিন জুঁইয়ের মা মমিনা খাতুন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চাটমোহর থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে ১৯ এপ্রিল পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

জবানবন্দিতে আসামিরা জানায়, পহেলা বৈশাখের দিন তারা গাঁজা সেবনের পাশাপাশি ‘মেয়ে এনে আনন্দ করার’ পরিকল্পনা করেছিল। টাকা না থাকায় এক আমবাগানে গাঁজা সেবনকালে আম কুড়াতে আসা শিশু জুঁইকে দেখে তারা বিকৃত মানসিকতায় জর্জরিত হয়ে ওঠে। এরপর জুঁইকে ধরে পাশের কলাবাগানে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং পরে তার পড়নের প্যান্ট দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মরদেহ শনাক্ত ঠেকাতে তারা মুখে অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ ঢেলে দেয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো—বড়াইগ্রামের গারফা গ্রামের সোহেল রানা (২৫), শেখ সাদি (১৬), শাকিব (১৬), সিয়াম (১৩) এবং চাটমোহরের রামপুর গ্রামের আবদুল্লাহ (১৬)।

তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে নিরীহ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।