সালমান এফ রহমান পরিবারের ১০৭টি বিও হিসাব ও ৯৪ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও দেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, তার ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নামে থাকা ১০৭টি বিও হিসাব এবং ৯৪টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করেছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৭ মে) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সালমান এফ রহমান ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি, প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ, অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে তাদের মালিকানাধীন বিও হিসাব ও কোম্পানিগুলোর শেয়ারের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংস্থাটির উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এসব শেয়ার ও বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে অভিযুক্তরা এই সম্পদ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা রূপান্তরের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে তারা সফল হলে তদন্ত, মামলা রুজু, আদালতে চার্জশিট দাখিল ও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর অবৈধ আয়ের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ন্যায়বিচার ও সুষ্ঠু অনুসন্ধান নিশ্চিতে এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা অপরিহার্য। আদালতের আদেশের পর প্রশ্ন উঠছে, দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একজন উপদেষ্টার বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদের উৎস কীভাবে গোপন থেকে গেল এবং এসব কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ভূমিকাই বা কী ছিল।
এখন পর্যন্ত সালমান এফ রহমান বা তার পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আইনি মহলে ধারণা করা হচ্ছে, তারা উচ্চ আদালতে এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে এই আদেশের তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়তে পারে।
আপনার মতামত লিখুন