‘আশার বাতিঘর’ হতে চায় বাংলাদেশ, দোহায় অধ্যাপক ইউনূসের প্রস্তাব

দোহায় অনুষ্ঠিত আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে মূল বক্তব্য প্রদান করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক
বিশ্বব্যাপী ন্যায্যতা, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ মিলে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে।
মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া এক প্রাঞ্জল বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি এমন এক চুক্তি হবে যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণ বিশেষত যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং সুযোগের ভিত্তিতে একত্রে ভবিষ্যৎ গড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাই। এজন্য সকল বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়নে অবদান রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে একটি সহনশীল, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুততর হচ্ছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মানবিক সংকট দিনদিন বেড়েই চলেছে। এ সময়ে বৈশ্বিক সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ এমন কিছু নয় যা আমরা উত্তরাধিকার হিসেবে পাই, এটি আমরা তৈরি করি। এবং আমাদের প্রত্যেকেরই এতে একটি করে ভূমিকা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বিশেষভাবে কাতার সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং ধন্যবাদ জানান কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের ও ভাইস চেয়ারপারসন শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানিকে।
দুই দিনব্যাপী এই শীর্ষ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’। সম্মেলনে আলোচনা হচ্ছে কীভাবে ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনের সংমিশ্রণে আধুনিক টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।
আপনার মতামত লিখুন