পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

3 Min Read

নিজস্ব প্রতিবেদক । নিউজনেক্সটবিডি.কম

ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো মীমাংসা করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোর একটি হোটেলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি।’

জবাবে শাহবাজ শরিফ বলেন, ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়গুলো মীমাংসা করেছে, কিন্তু যদি অন্যান্য অমীমাংসিত সমস্যা থাকে, তবে সেগুলো দেখতে পেলে তিনি খুশি হবেন।

অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করে ফেলা ভালো হবে।

তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হয়।

এখানে প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়, দুই নেতা চিনি শিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস ও শাহবাজ শরিফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত বৈদেশিক নীতির মূল বৈশিষ্ট্য সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

২০০৬ সালের নোবেল শান্তি বিজয়ী ২০২৬ সালের মধ্যভাগের আগে ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ এবং সাধারণ নির্বাচন করতে তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।

- Advertisement -

তিনি বলেন, তিনি সংস্কারের বিষয়ে সংলাপের জন্য একটি ঐকমত্য গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমরা সত্যিই আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় রয়েছি।’

- Advertisement -

তিনি সার্ক পুনরুজ্জীবনে অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস শাহবাজ শরিফকে বলেন, ‘এটি একটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তিনি বলেন, ‘আমি সার্কের ধারণার একজন বড় অনুরাগী। আমি ইস্যুটি নিয়ে কথা বলেই যাব। আমি সার্ক নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন চাই। তিনি বলেন, যদিও তা কেবল একটি ফটোসেশনের জন্যেও হয়, তবুও এটি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করবে।’

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে আরও ভালভাবে পরিচালনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেন।

তিনি বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং বলেন, ঢাকা এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘প্রায় এক দশক আগে পাঞ্জাবে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে বিশ্বমানের বলে প্রশংসিত হয়েছিল। বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আমরা বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল পাঠাতে পারি।’

অধ্যাপক ইউনূস, শাহবাজ শরিফকে তাঁর সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা করেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী।

সিদ্দিকী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দারকে ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও অধ্যাপক ইউনূসকে তাঁর সুবিধামত সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।

 

 

 

newsnextbd20
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *