অভ্যুত্থানে ছাত্র মাসুম হত্যায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফেনী :
প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১০:৫৫
অভ্যুত্থানে ছাত্র মাসুম হত্যায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্রদের ‘বৈষম্যবিরোধী’ আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম। এক বছর পর সেই ঘটনায় আলোচিত একটি মোড় নেয়, যখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মাসুম হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই চার্জশিট দাখিল করা হয়, যা দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ফেনীর মহিপালে কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম (২৫) হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ ২২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফেনীর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান।

চার্জশিটে অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীসহ অনেকে।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ এক দফা অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন মাসুম। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৭ আগস্ট তিনি মারা যান।

মাসুম ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের তরাব পাটোয়ারী বাড়ির বাসিন্দা ও প্রয়াত মাওলানা নোমান হাসানের ছেলে। তিনি ছাগলনাইয়া আব্দুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

ঘটনার এক মাস পর, ৪ সেপ্টেম্বর নিহত মাসুমের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ১৬২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪০০-৫০০ অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চার্জশিটে আরও যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে আছেন—ফেনী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, ফেনী সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ছাগলনাইয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সোনাগাজীর সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, পরশুরাম পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম পিটু ও জিয়া উদ্দিন বাবলু প্রমুখ।

ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান,

    এ মামলায় এজাহারভুক্ত ১২ জন এবং সন্দেহভাজন ৩৯ জনসহ মোট ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মুরাদ হাসান বাবুসহ তিনজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহত মাসুমের ভাই ও মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান বলেন,“আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্বরতা, কারবালার নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে : তারেক রহমান