‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আমদানি-রপ্তানিতে বিপর্যয়: চট্টগ্রাম ও বেনাপোলে স্থবিরতা

বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২৮ জুন, ২০২৫, ১১:০৭
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আমদানি-রপ্তানিতে বিপর্যয়: চট্টগ্রাম ও বেনাপোলে স্থবিরতা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ ও প্রতিহিংসামূলক বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে।

শনিবার (২৯ জুন) সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচির ফলে বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বাইরে এবং জেটির ভেতরে পণ্যবোঝাই ট্রাক ও কনটেইনারবাহী গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। আমদানি-রপ্তানির শুল্কায়ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ থাকায় সিঅ্যান্ডএফ (C&F) এজেন্টরা কাজ করতে পারছেন না। ফলে বন্দরে পণ্য ছাড় প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, শুল্কায়ন ছাড়া কোনো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্ভব নয়। ফলে কাস্টমস কার্যক্রম বন্ধ থাকলে বন্দর কার্যক্রমে বিপর্যয় নেমে আসে।

বন্দরের চিফ পার্সোনাল অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানামা এখনো চলছে, তবে যেসব কার্যক্রমে কাস্টমস প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, সেখানে সমস্যা হচ্ছে।

শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, নিবন্ধিত জাহাজে কনটেইনার ওঠানামা চললেও নতুন জাহাজে কাজ বন্ধ রয়েছে। শিগগিরই সমাধান না হলে আমদানি-রপ্তানিতে ভয়াবহ সংকট দেখা দেবে।

একই চিত্র দেখা গেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসেও। আজ সেখানে কোনো শুল্কায়ন কার্যক্রম হয়নি। বৃহস্পতিবার অনুমোদিত মাত্র ছয়টি পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে প্রবেশ করেছে। তবে কোনো রপ্তানি হয়নি।

কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, শনিবার সকাল থেকে সম্পূর্ণ শাটডাউনের কারণে কাস্টম হাউস কার্যত বন্ধ। কার্গো শাখাতেও কেউ আসেননি।

কাস্টম হাউসের গেটে শাটডাউনের ব্যানার টানানো হয়েছে। সিএন্ডএফ এজেন্টদের বিল অফ এন্ট্রি জমা দেওয়ার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধান গেট বন্ধ রেখেছেন।

এর আগে অর্ধদিবস কর্মবিরতির সময় আমদানি-রপ্তানিতে প্রভাব পড়েনি। তবে এখন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর ফলে বন্দরে পণ্যজট, আমদানি-রপ্তানি স্থবিরতা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। কাস্টমস সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।