ট্রাম্পের চিঠিতে ৩৫% শুল্কের ব্যাখ্যা, ইউনূসের অনুরোধে সাড়া নেই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রকাশ: ৮ জুলাই, ২০২৫, ৮:০২
ট্রাম্পের চিঠিতে ৩৫% শুল্কের ব্যাখ্যা, ইউনূসের অনুরোধে সাড়া নেই

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা বহাল রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাঠানো চিঠির জবাবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, এই শুল্ক হার আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার একটি ন্যূনতম পদক্ষেপ।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতদিন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে গড় শুল্কহার ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। নতুন এই শুল্ক আরোপের ফলে তা দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক, অশুল্ক নীতি ও নানা বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বড় বাণিজ্য ঘাটতির সৃষ্টি করেছে। তিনি একে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।

মুহাম্মদ ইউনূসের চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক এজেন্ডাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এমনকি, চলতি বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড় দেয়, যার মধ্যে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়।

তবে সেই উদ্যোগ ট্রাম্প প্রশাসনের মন পরিবর্তনে ব্যর্থ হয়। ট্রাম্প তাঁর চিঠিতে বলেন, এই ৩৫ শতাংশ শুল্ক হারও খুব বেশি নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে যা প্রয়োজন, তার তুলনায় এটি অনেক কম। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের কোনো কোম্পানি যদি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করতে চায়, তাহলে শুল্ক ছাড় দেওয়া হবে এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেওয়া হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ যদি পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে সেই হার ৩৫ শতাংশের সঙ্গে যোগ হবে। ট্রাম্প ভবিষ্যতের সম্পর্কের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে জানান, যদি বাংলাদেশ তার বাজার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত করে এবং সবধরনের বাণিজ্য বাধা সরিয়ে নেয়, তাহলে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকবে। তবে তার ভাষ্য অনুযায়ী, এখন সময় এসেছে সমতা ও ভারসাম্যের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার।

চিঠির সমাপ্তিতে ট্রাম্প লেখেন, “আমরা আপনার দেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী। তবে সেই সম্পর্ক হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থকে অক্ষুন্ন রেখেই।”