ডিএসসিসি কার্যত অচল, নাগরিক সেবা চালু রেখেই আন্দোলন চালাবেন ইশরাক

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১৫ জুন, ২০২৫, ৭:৩৪
ডিএসসিসি কার্যত অচল, নাগরিক সেবা চালু রেখেই আন্দোলন চালাবেন ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ গ্রহণের দাবিতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ও তার অনুসারীরা নগর ভবনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (১৫ জুন) সকাল থেকে নগর ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া এ আন্দোলনে বেলা ১১টার দিকে সরাসরি যোগ দিয়ে ইশরাক হোসেন ঘোষণা দেন— শপথ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন বিরতিহীনভাবে চলবে।

তিনি বলেন, “সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত এ সমস্যার সুরাহা করুন। তা না হলে অচলাবস্থা চলবেই। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আমরা এখান থেকে একচুলও সরব না। এই লড়াই থেকে পিছু হটার সুযোগ নেই।”

ইশরাক জানান, আন্দোলনের মধ্যেও নাগরিক সেবা চালু থাকবে। “জনগণের ভোগান্তি আমরা চাই না। ডিএসসিসির দৈনন্দিন কাজ আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে। কিন্তু আন্দোলন চলবে। এটিই জনগণের দাবি। এমনি এমনি আন্দোলন থামবে না।”

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে ভুল বুঝানো হয়েছে। শপথ পড়ানো হলে আগের সরকারের অবৈধতা প্রকাশ হয়ে যাবে বলেই বাধা দিচ্ছে একটি গোষ্ঠী। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাসী। আদালতের রায় ও জনগণের রায়কে মেনে নিতে হবে।”

এ সময় নগর ভবন চত্বরে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ‘শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা চলবে না’, ‘নগরপিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমার ভুলি নাই’ ইত্যাদি স্লোগানে পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলে। গত ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত আন্দোলনের কারণে নগর ভবনের নাগরিক সেবা কার্যত বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আন্দোলনে আবারও সক্রিয় হয়েছে ইশরাকের অনুসারীরা।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ১৪ মে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে তার শপথ ঠেকানোর চেষ্টা হয়। শেষ পর্যন্ত আদালত রিট খারিজ করে।

আইনি জটিলতার কথা বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এখনো শপথের ব্যবস্থা না করায় ক্ষুব্ধ বিএনপি সমর্থকরা আন্দোলনে অনড় রয়েছে। ইশরাক হুঁশিয়ার করে বলেন, “প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।”