তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ইনকিলাব মঞ্চের

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রতিক্রিয়া ইনকিলাব মঞ্চের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে দ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তী সরকার) ভেঙে দিন এবং আপনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) প্রধান হয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করুন।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “নির্বাচন হবে, কিন্তু রোডম্যাপ কোথায়?” পাশাপাশি তিনি বলেন, “আপনাকে কিছু বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নিতে হবে— প্রথমত, ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিল করে ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন, পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন, বিচারব্যবস্থা ও জনপ্রশাসনের সংস্কার জরুরি।”
ঘোষণাপত্র পাঠের সময় ড. ইউনূসের ভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলে শরিফ বলেন, “অন্যান্য সময় তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন, কিন্তু ঘোষণাপত্র পাঠের সময় মনে হচ্ছিল, রাজনৈতিক দলগুলো তাকে দিয়ে পড়িয়ে নিয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, ঘোষণাপত্রে বাঙালির গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন ও সংগ্রামের যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তার ভাষায়, “শাহবাগের বিচারিক হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালের শাপলা গণহত্যা এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “১৯৪৭ থেকে ১৯৭১, তারপর ২০২৪ পর্যন্ত একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো যেসব অরাজনৈতিক মানুষ নেতৃত্ব দিয়েছেন, তা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়নি।”
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে শরিফ বলেন, “পিলখানার কথা বললে সেনাবাহিনী রাগ করবে, সেই ভয়েই কি আপনি পিলখানার কথা বলেননি? শাপলার কথা বাদ দিয়ে কি আপনি আবার কোনো ফ্যাসিবাদ আনতে চান?”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “জামায়াতের নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি কি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে?” পাশাপাশি জানান, জুলাই সনদে উল্লিখিত ১৯টি সংস্কারের মধ্যে বিএনপি ১০টিতেই ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, অর্থাৎ আপাতত স্বীকৃতি দিলেও তারা এতে একমত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে শরিফ ওসমান বিন হাদী সরকারের পতন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ঐতিহাসিক আন্দোলনগুলোর স্বীকৃতির দাবি তুলে ধরেন এবং বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমেই কেবল সঠিকভাবে নির্বাচনের রূপরেখা বাস্তবায়ন সম্ভব।”
আপনার মতামত লিখুন