দেশে কোনো সরকারই আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিতে চায়নি: ঊষাতন তালুকদার

রাঙামাটি প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫, ১:৩০
দেশে কোনো সরকারই আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিতে চায়নি: ঊষাতন তালুকদার

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে রাঙামাটিতে র‍্যালি, ছবি - নিউজনেক্সট।

বাংলাদেশে যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে, কেউই আদিবাসীদের অধিকার ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায়নি, এ অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।

শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ভাষণে আদিবাসীদের কথা বলায় দেশের কিছু মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, পদত্যাগ ও ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন। যেন ‘আদিবাসী’ শব্দ উচ্চারণ করাটাই অপরাধ। আমরা আদিবাসী হয়েও যেন অপরাধী হয়ে গেছি।

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি খোলা মন নিয়ে এগিয়ে আসে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা দ্রুত সমাধান সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা, আর পার্বত্য অঞ্চলে আরেক ধরনের ব্যবস্থা চালু আছে। এতে আমাদের চলাফেরার নিরাপত্তা নেই, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, নিপীড়ন ও শোষণের দীর্ঘ ইতিহাস বহন করছি আমরা। তাই অস্তিত্ব, আত্মপরিচয়, অধিকার ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা।

উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, শিক্ষাবিদ ও সংস্কৃতিকর্মী শিশির চাকমা, অ্যাডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান, আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টুমনি তালুকদারসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।

বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র আমাদের স্বীকৃতি না দিলেও জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই আমাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি থাকা সত্ত্বেও আমাদের ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা উপজাতি বলে অভিহিত করা হচ্ছে। আমরা সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই এবং সরকারকে আন্তরিকভাবে এ নিয়ে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। পরে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, পাংখোয়াসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ ও শিশুরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন।