নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ: কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৫, ৩:৪৭
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ: কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ খুন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ইজিবাইক স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন। শনিবার রাতে বন্দর রেললাইন ও শাহি মসজিদ এলাকায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটে দুটি পৃথক হত্যাকাণ্ড। পরে পুলিশ ও র‍্যাব অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহতরা হলেন হাফেজীবাগ এলাকার চা দোকানি আব্দুল কুদ্দুস (৬০) এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান (৪২)। সংঘর্ষের উৎস ছিল স্থানীয় ২১ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা হান্নান সরকার ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশার অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হন। এর জের ধরে শনিবার রাত ১০টার দিকে পারভেজের বাবা কুদ্দুসকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযুক্ত ছিলেন মেহেদী হাসান ও বাবু সিকদারপন্থী অনুসারীরা।

কুদ্দুস হত্যার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তার লাশ নিয়ে মিছিল বের হয়, ভাঙচুর চালানো হয় হান্নান সরকারের বাড়িতে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১২টার দিকে প্রতিপক্ষ রনি ও জাফর গ্রুপের লোকজন মেহেদী হাসানকে রাস্তায় পেয়ে ধরে নিয়ে যান এবং সিরাজ উদ দৌলা ক্লাবের সামনে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করেন।

নিহত কুদ্দুসের ভাই দুদু মিয়া বলেন, ভাইকে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করে পারভেজ কোথায়। সে উত্তর না দিতে পারায় হত্যা করে। অন্যদিকে, মেহেদীর আত্মীয় মাহফুজুল হক বলেন, রাস্তায় পেয়ে ধরে নিয়ে ক্লাবে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন।

এই সহিংসতার বিষয়ে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা দাবি করেন, দুই পক্ষই আগে একসাথে রাজনীতি করত, এমনকি আওয়ামী লীগের আমলে জেলও খেটেছে। পরে কিছু স্থানীয় বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এতে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

অপর অভিযুক্ত হান্নান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর বিষয়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হবে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িত কেউই ছাড় পাবে না।