পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় পশ্চিমা বিশ্ব

ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেই ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই ঘোষণার পরপরই সংঘাত নিরসনে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করেছে ইউরোপের তিন শক্তিধর দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে আলোচনায় বসেন এই তিন দেশের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় অংশ নেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরাও। মূল লক্ষ্য ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে একটি কূটনৈতিক সমাধান এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সামরিক রূপ না নেওয়া নিশ্চিত করা।
যদিও ইসরায়েলের সামরিক হামলার মধ্যেই পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা চালাবে না বলে শুক্রবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখন ইউরোপীয় দেশগুলো তেহরানকে ফের আলোচনায় আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে, আর যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে এই সংঘাতে সক্রিয়ভাবে জড়ানো হবে কি না।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠকে ইউরোপীয় দেশগুলো ইরানের ওপর পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার বিষয়ে চাপ আরও জোরালো করবে। বিষয়টি ইঙ্গিত করে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকেও আলোচনার দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করা হয়।
জেনেভায় আলোচনার ঠিক একদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। বৈঠক শেষে ল্যামি বলেন, সংঘাত বন্ধ করতে ইরানের সঙ্গে একটি কার্যকর পারমাণবিক চুক্তি প্রয়োজন। রুবিও এবং ল্যামি উভয়েই একমত হন যে, ইরানের হাতে কখনও পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানের ওপর বড় ধরনের সামরিক হামলা চালানোর পর পাল্টাপাল্টি আঘাতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এতে করে ইউরোপীয় দেশগুলো সংঘাত নিয়ন্ত্রণে কূটনৈতিক উদ্যোগে এগিয়ে এসেছে।
জার্মান এক কূটনীতিক জানান, এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো, ইরানকে এমনভাবে রাজি করানো যাতে তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পুরোপুরি বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালনা করতে সম্মত হয়। আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হলে ভবিষ্যতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে কাঠামোগত আলোচনা শুরু করা হবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল বরাবরই বলে আসছে, তাদের লক্ষ্য ইরান যেন কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে না পারে। তবে তেহরান দাবি করে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক, সামরিক উদ্দেশ্যে নয়।
– রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন