বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ফুলগাজী-পরশুরাম, প্রস্তুত ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র

আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফেনী:
প্রকাশ: ৮ জুলাই, ২০২৫, ৭:৪১
বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ফুলগাজী-পরশুরাম, প্রস্তুত ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র

ফেনীতে টানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ১০টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার একাধিক গ্রামে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করে। ফলে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়ে পড়েছে এবং দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ফেনীর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। মুহুরী নদীর পানি বর্তমানে বিপদসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আকতার হোসেন মজুমদার জানান, নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে এবং ইতিমধ্যে একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে এবং ভাঙনরোধে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

নিউজ নেক্সটের অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মধ্যম ধনীকুন্ডা, নোয়াপুর ও শালধর এলাকায় তিনটি এবং ফুলগাজী উপজেলার দেড়পাড়া ও নাপিত কোনায় তিনটি স্থানে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে। পাশাপাশি সিলোনিয়া নদীর মির্জানগর ইউনিয়নের পশ্চিম গদানগর, জঙ্গলঘোনা, উত্তর মনিপুর দাসপাড়া এবং মেলাঘর কবরস্থানের পাশেও চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় ফুলগাজী উপজেলায় ৯৯টি এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমানে ফুলগাজীতে ২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৩৬টি পরিবারের ৮৫ জন, পরশুরামে ২টি কেন্দ্রে ৫টি পরিবারের ২০ জন এবং সদর উপজেলায় ১টি কেন্দ্রে ৭টি পরিবারের ২৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রবল বর্ষণ ও উজানের পানির প্রবাহ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা দ্রুত বাঁধ সংস্কার ও প্রয়োজনীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।