রাজশাহীতে বিএনপি নেতার রগ কাটার চেষ্টা: জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ

By রাজশাহী প্রতিনিধি :

3 Min Read

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় বিএনপির এক সক্রিয় কর্মীর ওপর নৃশংস হামলার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এলাকাবাসীর ক্ষোভেই ওই ব্যক্তি মার খেয়েছেন, এতে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে, উপজেলার আচিনঘাট এলাকায়। আহত ব্যক্তির নাম সাহেব আলী (৫০)। তিনি স্থানীয় একজন বাসিন্দা ও বিএনপির সক্রিয় কর্মী।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাহেব আলী দুপুরে আচিনঘাটের একটি পুকুরপাড়ে বসেছিলেন। এ সময় কয়েকজন লোক এসে তাঁকে জোরপূর্বক পাশের রাস্তায় নিয়ে যায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাঁর চিৎকার শুনে এলাকাবাসী ছুটে এসে উদ্ধার করেন এবং গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।

ঘটনার পর বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আলোচনায় আসে। স্থানীয় বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব শামসুজ্জোহা সরকার একটি ফেসবুক পোস্টে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি লিখেছেন, জামায়াতের গণিপুর ইউনিয়নের আমির মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, কর্মী আতাউর রহমান ও মাসুদ এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তাঁর দাবি, হামলাকারীরা সাহেব আলীর পায়ের রগ কাটার চেষ্টা করেন, তবে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তাঁরা পালিয়ে যান।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, সাহেব আলী ও মাহবুব আলমের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। একটি আমবাগানের মাটি ধসে সাহেব আলীর পুকুরে জমা হওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে একাধিকবার বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এ ছাড়া সাহেব আলীর বিরুদ্ধে মাদকের সঙ্গেও সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। পুকুরপাড়ের একটি খুপরি ঘরে মাদক কেনাবেচা হতো, যেখানে সাহেব আলী যুক্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিএনপি নেতা শামসুজ্জোহা সরকার বলেন, “এটা একটা ন্যক্কারজনক হামলা। রগ হয়তো পুরোপুরি কাটেনি, তবে ক্ষত গুরুতর। সাহেব আলী আমাদের দলের নিবেদিত কর্মী। গত বছরের আন্দোলনের সময় তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল, তিনি ৫ আগস্টের পর মুক্তি পান।”

অন্যদিকে জামায়াতের নেতারা এসব অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। গণিপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাহবুব আলম বলেন, “সাহেব আলী একজন চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী। এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে মারধর করেছেন বলে শুনেছি। জামায়াতের কেউ এতে জড়িত নয়।”

একই বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “জামায়াত-শিবিরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টার্গেট করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”

- Advertisement -

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি আমরা শুনেছি। সাহেব আলীর ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তাঁরা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে সাহেব আলীও এক জামায়াত কর্মীর ওপর হামলা করেছিলেন। সে ঘটনায় থানায় জিডিও করা হয়েছে।”

newsnextbd20
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *