রূপপুর প্রকল্পে আরও ৮ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত, প্রকল্প এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) আরও আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের প্রকল্প এলাকায় প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. জাহেদুল হাছানের স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক নোটিশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। আজ বুধবার (১৪ মে) ওই পত্রদ্বয় ইমেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন: সহকারী ব্যবস্থাপক ইকতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিপ্লব, শামীম আহম্মেদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মো. গোলাম আজম; উর্ধ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনির; উর্ধ্বতন উপসহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম আজম এবং টেকনিশিয়ান রিয়াজ উদ্দিন ও ইসমাইল হোসেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, তারা প্রকল্প এলাকায় শৃঙ্খলা বিরোধী, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন এবং কর্তব্যে অবহেলা করেছেন। কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে একটি পৃথক পত্রে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে বরখাস্তকৃত ওই ৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর রূপপুর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হলো।
এর আগে, ৮ মে একইভাবে এনপিসিবিএলের ১৮ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং প্রকল্প এলাকায় তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
সাময়িক বরখাস্তের প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্তের মুখে পড়তে হয়েছে। এ বিষয়ে তারা ঢাকায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বলেন, “আমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছি। শুধু ন্যায্য অধিকার আদায়ের প্রশ্নে মুখ খুলতেই এভাবে দমন করার চেষ্টা চলছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
নতুন ৮ জনকে বরখাস্তের বিষয়ে জানতে এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহেদুল হাছানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে ১৮ কর্মকর্তার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, যথাযথ তদন্ত ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এনপিসিবিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহেদুল হাছানের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবিতে গত কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। গত ৬ মে তারা ঈশ্বরদী শহরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন এবং প্রকল্প এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
আপনার মতামত লিখুন