সালাউদ্দিন কাদেরকে ‘নির্দোষ’ প্রমাণে আদালতে যাবে পরিবার

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) ‘বিচারিক হত্যা বা জুডিশিয়াল কিলিং’-এর শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির কিউ সি রেসিডেন্সে সংবাদ সম্মেলনে হুম্মাম বলেন, তার বাবা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত’ ছিলেন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ছিল অনৈতিক। সংবাদ সম্মেলনে তার মা ফরহাত কাদের চৌধুরী ও বড় ভাই ফাইয়াজ কাদের চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
হুম্মামের অভিযোগ, ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে চারজন বিদেশি বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করেছিলেন—মুনীম আরজুমান খান, আমবার হারুন সাইগেল, ইশহাক খান খাগওয়ানি ও নিয়াজ আহমেদ নূর সাফাই।
কিন্তু তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের দেশে আসা বাধা দেয়। হুম্মাম বলেন, এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন সেই সময়ের সরকার ও কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, “এভাবে প্রমাণ হয় যে, আমার বাবার সঙ্গে বড় অন্যায় হয়েছে। তাকে ফেয়ার জাস্টিসের কাছে আনা হয়নি। এটি ছিল একটি জুডিশিয়াল মার্ডার।”
তিনি জানান, আগামী রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উকিল নোটিস পাঠিয়ে ডিক্লাসিফাই করা গোপন বার্তা প্রকাশের দাবি জানানো হবে। এরপর তারা এভিডেন্স নিয়ে হাই কোর্টে রিট দাখিল করবেন।
হুম্মাম বলেন, “আমরা মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য নয়, সরাসরি কোর্টে যাব। আশা করি প্রমাণ করতে পারব, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নির্দোষ ছিলেন।”
হুম্মাম এবং তার পরিবার আরও দাবি করেছেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের রায় ট্রাইব্যুনালে নয়, ‘আইন মন্ত্রণালয়ে লেখা হয়েছিল’ এবং রায় ঘোষণার আগেই ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
তিনি বলেন, “উচ্চ আদালতের একজন বিচারক সাফাই সাক্ষ্যের জন্য বাবার পক্ষে ট্রাইব্যুনালে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রধান বিচারপতি অনুমতি দেননি।”
ফরহাত কাদের চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, আটককালে তার স্বামীর ওপর সশরীর নির্যাতন চালানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “রাতভর পিজি হাসপাতালে টর্চার করা হয়েছিল। ভিডিওতে দেখা গেছে, তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছিল।”
বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী বলেন, “আমরা বিদেশি দূতাবাসে বাবাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম। বিদেশিরা জানতেন, ট্রাইব্যুনাল আসলে খুন করার জন্য।” হুম্মাম আরও জানান, আদালতে সাক্ষী দেওয়ার সময় বেশিরভাগ সাক্ষী চাপের মধ্যে ছিলেন। সাকা চৌধুরী জীবনের শেষ পর্যন্ত প্রাণভিক্ষা চাননি।
হুম্মাম বলেন, “বাবা আল্লাহর কাছে বিচার চাইবেন, মার্সি পিটিশন তাঁকে প্রয়োজন ছিল না। আমি নিজে রাষ্ট্রপতির কাছে রি-ট্রায়ালের পিটিশন নিয়েছিলাম, কিন্তু দেখা হয়নি।”
আপনার মতামত লিখুন