হরমুজ প্রণালি বন্ধের পথে ইরান, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের শঙ্কা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশ: ২২ জুন, ২০২৫, ৪:৪৩
হরমুজ প্রণালি বন্ধের পথে ইরান, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ইরানের পার্লামেন্ট। এই সিদ্ধান্তের ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে গভীর সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইসমাইল কোসারি জানিয়েছেন, মার্কিন আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় সংসদ সদস্যরা হরমুজ প্রণালি বন্ধের পক্ষে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

কোসারি বলেন, আমরা প্রণালি বন্ধের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি, তবে এটি বাস্তবায়নের ক্ষমতা রয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের হাতে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি প্রয়োজনীয় ও কৌশলগত জবাব।

পারস্য উপসাগরের প্রবেশমুখে অবস্থিত হরমুজ প্রণালি বিশ্বজুড়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুট। প্রতিদিন এই পথ দিয়ে ১৭ থেকে ১৮ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়, যা বৈশ্বিক সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ। একই পথ ব্যবহার করেই কাতারসহ উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি হয়ে থাকে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে তেলের দাম অল্প সময়ের মধ্যেই ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। বিকল্প পরিবহনপথ ব্যয়বহুল হওয়ায় বিশ্বজুড়ে শিল্পকারখানাগুলো চাপে পড়বে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে পরিচিত সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতাঞ্জ, ফোরদো ও ইস্পাহানে অবস্থিত শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালানোর পরপরই হরমুজ প্রণালি বন্ধের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। ইরান এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আগ্রাসন হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এই প্রস্তাব ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। কারণ, হরমুজ প্রণালিকে কেন্দ্র করে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে গেলে তা কেবল মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। যদিও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শক্তিগুলো উত্তেজনা প্রশমনে আহ্বান জানাচ্ছে, পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে।