হারলেও নবজাগরণের আভাস দিল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১০ জুন, ২০২৫, ৪:৩১
হারলেও নবজাগরণের আভাস দিল বাংলাদেশ

এই ম্যাচের মাধ্যমে দেশের ফুটবলে এক নতুন দিনের ইঙ্গিত মিলেছে। টানটান উত্তেজনায় ভরা ম্যাচে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েছে হাভিয়ের কাবরেরার বাংলাদেশ। তবে শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় লাল-সবুজদের।

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আজকের ম্যাচ ঘিরে ছিল প্রচণ্ড প্রত্যাশা। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরির অভিষেকের পাশাপাশি মাঠে ছিলেন তরুণ ফুটবলার ফাহামেদুল ইসলাম ও শমিত সোম। প্রথম থেকেই চোখে চোখ রেখে লড়েছে বাংলাদেশ। হার সত্ত্বেও রণাঙ্গনে হামজা-রাকিবদের সাহসী উপস্থিতি নতুন দিনের স্বপ্ন দেখিয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল লড়েছে সমানতালে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। তবে প্রথমার্ধের অন্তিম মুহূর্তে সিঙ্গাপুরের সং উইংয়ের গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার আরও বাড়ান জামাল ভূঁইয়া, ফাহামেদুল ও রাকিবরা।

বিরতির পর কোচ কাবরেরা শাহরিয়ার ইমনকে বদলি হিসেবে মাঠে নামান। ইমনের পায়ে আসে একটি দারুণ সুযোগ, কিন্তু রাকিবের পাসে ঠিকঠাক সংযোগ করতে ব্যর্থ হন তিনি। এরপর ৫১ মিনিটে সিঙ্গাপুরের রায়হান স্টুয়ার্টের আক্রমণ রুখে দেন ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন।

তবে ৫৮ মিনিটে সিঙ্গাপুর ব্যবধান দ্বিগুণ করে। মিডফিল্ডার হামি শাহিনের শট ঠেকান গোলরক্ষক মিতুল, কিন্তু ডিফেন্ডারদের ভুলে বল চলে যায় ইখসানের পায়ে। সহজেই বল জালে পাঠিয়ে ২-০ তে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

৬৭ মিনিটে ব্যবধান কমান রাকিব হোসেন। মাঝমাঠ থেকে বল এগিয়ে এনে নিখুঁত পাস দেন হামজা। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ইজওয়ান সামনে এগিয়ে এলেও রাকিবের আগে ভাগে নেওয়া শট তার হাতে লেগে গড়িয়ে গড়িয়ে জালে প্রবেশ করে। জাতীয় দলের জার্সিতে এটি ছিল রাকিবের পঞ্চম গোল। ২১ হাজারেরও বেশি দর্শকে গমগম করতে থাকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।

এরপর সমতায় ফেরার জন্য একের পর এক আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ। ৮২ মিনিটে মোরছালিনের কর্নার থেকে আল আমিনের হেড প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। টানা তিনটি কর্নার থেকেও গোল মেলেনি। ৮৪ মিনিটে সাদের থ্রো থেকে তারিক কাজির হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৯৬ মিনিটে ইমনের পাসে হামজার কোনাকুনি শট প্রায় গোল হয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। শেষ সুযোগ আসে মোরছালিনের শর্ট কর্নার থেকে। বক্সে বল উড়িয়ে দেন আল আমিন, তারিক কাজির হেড আবারও পোস্টে লেগে গোলের বাইরে যায়।

সবশেষে স্কোরবোর্ডে ২-১ এর পরাজয় থাকলেও ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো দর্শক প্রশংসায় ভাসায় লড়াকু বাংলাদেশ দলকে। তরুণদের নৈপুণ্যে ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।