২৪ ঘণ্টায়ও সিসিটিভি ফুটেজে থাকা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ

ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে—এখনও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে থাকা কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার ওসি শাহিন খান শুক্রবার দুপুরে জানান, “ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে, তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। আটক কেউই সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েনি—শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে।”
এর আগে নিহত তুহিনের ভাই সেলিম মিয়া অজ্ঞাতনামা ২০–২৫ জনকে আসামি করে বাসন থানায় হত্যা মামলা করেন।
কীভাবে ঘটল হত্যাকাণ্ড
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা মসজিদ মার্কেট এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’-এর গাজীপুর প্রতিনিধি তুহিন (৩২)। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পেছনে কারণ ছিল এর আগে তিনি স্থানীয় এক ব্যক্তির ওপর হামলা ও কোপানোর একটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) রবিউল ইসলাম জানান, সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী, তুহিন স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে চান্দনায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করতেন।
তুহিনের বড় ভাই সেলিম জানান, সেদিন রাতে বাসায় ফেরার পথে ৬–৭ জন যুবক দা ও চাপাতি নিয়ে তুহিনকে ধাওয়া করে। তিনি স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নিলেও দুর্বৃত্তরা সেখানেই তার বুকে, গলায়, কাঁধে ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আশপাশে বহু মানুষ থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
ঘটনার সূত্রপাত
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক শামীম হোসেন বলেন, ঘটনার আগে একজন নারী ও বাদশা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ হয়। বাদশা মিয়া ওই নারীকে আঘাত করলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত নারীর পক্ষ নিয়ে বাদশা মিয়াকে আক্রমণ করে। পালানোর সময় বাদশা মিয়া রাস্তায় পড়ে গেলে তুহিন পাশ থেকে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। দুর্বৃত্তরা ভিডিও মুছে ফেলতে বললে তুহিন অস্বীকৃতি জানান। এরপরই তাকে ধাওয়া করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশের তথ্যমতে, ওই নারী একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য, যারা সম্পর্ক তৈরি করে পরে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে লুটপাট করে। বাদশা মিয়া বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আপনার মতামত লিখুন