লাঠিচার্জ, গ্যাস, গ্রেনেড: জবির লংমার্চে পুলিশের তাণ্ডব, আহত শতাধিক

আবাসন ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনসহ তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সড়কে বসে বিক্ষোভ করেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গুলিস্তানের মাজার গেট এলাকায় প্রথমে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। সেখান থেকে অগ্রসর হয়ে মৎস্য ভবন পার হওয়ার সময় দ্বিতীয়বার বাধা দেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা। দুইবার বাধা অতিক্রম করে তারা কাকরাইল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় লাঠিপেটার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছোড়ে পুলিশ।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি সোহান ফরাজি এবং দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও আমাদের দাবিগুলো আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই অবস্থান করব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অমানবিক হামলা হয়েছে। এটি ন্যায্য আন্দোলনের ওপর নগ্ন হামলা। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকব।”
অন্যদিকে রমনা জোনের ডিসি মাসুদ বলেন, “যমুনার সামনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো —
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা (২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে)।
২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন।
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন।
আপনার মতামত লিখুন