নির্বাচন বিতর্কিত হলেও কমিশন দায়ী নয়: রিমান্ড শুনানিতে সাবেক সিইসি

বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২৩ জুন, ২০২৫, ২:৫৯
নির্বাচন বিতর্কিত হলেও কমিশন দায়ী নয়: রিমান্ড শুনানিতে সাবেক সিইসি

রাজধানীর শেরেবাংলা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশনের দায় অস্বীকার করে বলেছেন, নির্বাচন বিতর্কিত হলেও এর জন্য কমিশন দায়ী হতে পারে না।

সোমবার (২৩ জুন) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে নূরুল হুদা এসব মন্তব্য করেন। শুনানিতে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরে বাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার।

বিচারক তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে মনে করেন?

জবাবে নূরুল হুদা বলেন, না।

নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্য এবং তাদের সহায়তায় ১৬-১৭ লাখ কর্মকর্তা সারাদেশে কাজ করেন। কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবকিছু দেখা সম্ভব নয়। নির্বাচন সম্পন্ন হলে ফলাফল ঘোষণার পর কমিশনের আর কিছু করার থাকে না। এরপর বিষয়টি হাইকোর্টের এখতিয়ারে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে সেগুলোর বিচার আদালতই করতে পারে। নির্বাচন বিতর্কিত হলেও কমিশন দায়ী হতে পারে না।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে রাতের ভোট উৎসব হয়েছে। সাবেক সিইসি হিসেবে নূরুল হুদা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ কায়েমে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন।

তিনি বলেন, ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাতেই ভোট দিয়ে দিতে। বিরিয়ানি দিয়ে উৎসব হয়েছে। সাংবাদিকরা তার কাছে গিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোট তো হয়ে গেছে। এতো বড় নির্লজ্জতা, মিথ্যাচার আর কী হতে পারে!

প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে তার ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে, আসামিপক্ষের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম সজীব রিমান্ডের বিরোধিতা করে বলেন, রিমান্ড চাওয়ার সব ধারাই জামিনযোগ্য। তাই এখানে রিমান্ড আইনত অগ্রহণযোগ্য। এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ এজাহার।

তিনি আরও বলেন, নূরুল হুদা একজন মুক্তিযোদ্ধা। ৯ নম্বর সেক্টরে সাব-কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেছেন। তার নেতৃত্বেই পটুয়াখালী হানাদার মুক্ত হয়। এই বয়সে তাকে এইভাবে হয়রানি করা অনুচিত।

শুনানি শেষে বিচারক নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা থেকে কথিত জনতা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তখন তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয় এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, তার গলায় জুতার মালা পরানো হয়।

উল্লেখ্য, রোববার বিএনপির পক্ষ থেকে শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা এক মামলায় সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনারসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

‘জনতা’র হাতে সাবেক সিইসি লাঞ্ছিত, বিএনপির মামলায় পুলিশ হেফাজতে