শাপলা চত্বর অনুসন্ধান ও মামলা প্রত্যাহার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হেফাজতের বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত এবং পূর্ববর্তী সরকারের আমলে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা। শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অতীতের ‘নিপীড়নের’ বিচার দাবি করেন তারা, পাশাপাশি জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর প্রত্যাহার এবং ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন হেফাজতের শীর্ষ নেতারা।
শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের তথ্য জানিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। এতে বৈঠকে আলোচিত বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনামলে হেফাজতের নেতাকর্মী ও আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে সংঘটিত ‘হত্যাকাণ্ডের’ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, তথ্য উপাত্ত সংরক্ষণ এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে শাহবাগ আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ করেছিল হেফাজতে ইসলাম। ওই সমাবেশ ঘিরে দিনভর রাজধানীর মতিঝিল ও আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতা হয়। গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে হেফাজতের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর ‘হামলা ও হত্যাকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করে আসছে হেফাজতে ইসলাম।
তাদের দাবি অনুযায়ী, সেই অভিযানে বহু মানুষ নিহত হন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার সে সময় এক প্রতিবেদনে ৬১ জন নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করলেও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি ছিল— রাতের অভিযানে কেউ নিহত হননি এবং দিনভর সংঘাতে নিহত হন ১১ জন।
শনিবারের বৈঠকে হেফাজতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি বশির উল্লাহ এবং মুফতি কেফায়তুল্লাহ আজহারী।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ওজুল কবির খান এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আপনার মতামত লিখুন