চা-বাগানে প্রবেশে ফি, শ্রমিকদের দাবি ও সরকারের আশ্বাস

মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, ছবি - সংগৃহীত।
১৭ মে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘোষণা দেন, চা-বাগান পরিদর্শনে আগত পর্যটকদের কাছ থেকে এখন থেকে ২০ টাকা ফি নেওয়া হবে, যা ব্যয় হবে চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে। তিনি বলেন, চা-শ্রমিকদের দাবিগুলো আসলে তাদের অধিকার এবং এসব অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে।
সভার শুরুতে উপদেষ্টা গাছের চারা রোপণ ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন। পরে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে বলেন, মালিকরা শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে পালিয়ে গেলে সরকার তাদের খুঁজে এনে বেতন আদায় করবে।
চা-শ্রমিক নেতারা সভায় বক্তব্য দিয়ে তাদের বিভিন্ন দাবির কথা জানান। তারা বলেন, অস্থায়ী শ্রমিকদের কোনো রেশন সুবিধা নেই, তাদের স্থায়ীকরণেও জটিলতা রয়েছে। একই জায়গায় যুগের পর যুগ বসবাস করলেও ভূমির মালিকানা পান না তারা। অধিকাংশ বাগানে নেই সরকারি স্কুল, নেই স্যানিটেশন ব্যবস্থা। নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
তারা আরও বলেন, চা-শ্রমিকদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ‘চা-জনগোষ্ঠী শিল্পকলা একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা জরুরি। চট্টগ্রাম ভ্যালিতে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থাও চাওয়া হয়।
চা-বাগান বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে শ্রমিকরা উল্লেখ করেন, ফুলতলা টি কোম্পানি লিমিটেডের বাগান ৯ মাস ধরে বন্ধ, শ্রমিকেরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন, সন্তানদের পড়ালেখা ও চিকিৎসাও ব্যাহত হচ্ছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে এই বাগান চালু করার আহ্বান জানান।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওমর মোহাম্মদ ইমরুল মহসিন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন