জটিল হচ্ছে যুদ্ধবিরতির পথ: জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা আরও জটিল হয়ে উঠছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়া একের পর এক যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছে। কবে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হবে, তা এখনো অজানা।
এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।” খবর—বিবিসি। আগামী সোমবার ওয়াশিংটন ডিসি সফরে যাবেন জেলেনস্কি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে শান্তি চুক্তিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে জানা গেছে। আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, তিনি যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ী শান্তি চান।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লেখেন, “এটাই হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের সেরা উপায়। কারণ, যুদ্ধবিরতি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।” পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর জেলেনস্কিকে ফোন করে ট্রাম্প বলেন, “আগুন থামাতে হবে, হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে।” পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে জেলেনস্কি মস্কোর সঙ্গে টেকসই শান্তির শর্ত তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে—বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল থেকে অপহৃত শিশুদের মুক্তি।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য তাঁর অবস্থানে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এর আগে তিনি বলেছিলেন, দ্রুত যুদ্ধবিরতি চান। ইউক্রেনও বরাবরই যুদ্ধবিরতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছিল, পরে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের পথে যেতে চেয়েছিল। তবে আলাস্কা বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, এখন তিনি স্থায়ী সমাধান চান। এদিকে কূটনৈতিক সূত্র বলছে, পুতিন ট্রাম্পকে একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে ইউক্রেনকে ডনবাসের দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিনিময়ে রাশিয়া জাপোরিঝিয়া ও খেরসনের সম্মুখভাগে যুদ্ধ স্থগিত করবে।
রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অবৈধভাবে দখল করে নেয়। আট বছর পর পূর্ণমাত্রায় ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে এবং বর্তমানে লুহানস্কের বড় অংশ ও দোনেৎস্কের প্রায় ৭০ শতাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, যে কোনো শান্তি চুক্তিতে “অঞ্চল বিনিময়ের বিষয়টি” থাকতে পারে। বৈঠকের পর সেই প্রস্তাব তিনি জেলেনস্কির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে কয়েক দিন আগেই জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ইউক্রেন ডনবাস হস্তান্তর করবে না, কারণ ভবিষ্যতে এটিকে নতুন আগ্রাসনের অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। বিবিসির অংশীদার সিবিএস জানিয়েছে, ইউরোপীয় কূটনীতিকরা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প বৈঠকে জেলেনস্কিকে চাপ দিতে পারেন, যাতে তিনি আলোচিত শর্তগুলো মেনে নেন। সিবিএস আরও জানায়, বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের ফোন করে বলেছেন, পুতিন কিছু ছাড় দিতে রাজি, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
আপনার মতামত লিখুন