জুলাই অভ্যুত্থান ছিল জনগণের আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:০১
জুলাই অভ্যুত্থান ছিল জনগণের আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ: নাহিদ ইসলাম

‘২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তির পরিবর্তনের জন্য ছিল না; এটি একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসানোর পরিকল্পনাও নয়’ —এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন,

জুলাই অভ্যুত্থান ছিল রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এনসিপি একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তরুণরাই এই দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তোলা। অতীতে বিভিন্ন সময়ে জনগণ রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলন করেছে। ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের কথা আমরা বইয়ে পড়েছি। কিন্তু এসব আন্দোলন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার ফলেই দেশে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তাই এবারের অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে চলবে না। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে—এটা জাতির প্রতি আমাদের সকলের অঙ্গীকার।

এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা মৌলিক সংস্কারের কথা বলছি। রাষ্ট্রের কাঠামো এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যাতে সত্যিকার অর্থে গুণগত পরিবর্তন আসে। অতীতে আমাদের সংবিধান থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয়করণ হয়েছে। সংবিধানে একব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার কাঠামো তৈরি হয়েছিল। ফলে রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তন না করে যে-ই ক্ষমতায় আসুক, ফ্যাসিবাদী বা স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা থেকেই যাবে।

এনসিপির মতে, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা ও নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার সময়ের দাবি। নাহিদ ইসলাম বলেন, “এখন জাতির সামনে একটি বড় সুযোগ এসেছে। আমাদের দরকার জাতীয় ঐকমত্য, দরকার একটি ‘জুলাই সনদ’। আমরা সবাই যেন ঐক্যবদ্ধভাবে অঙ্গীকার করি—বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বা ফ্যাসিবাদ আসবে না। একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান ও রাষ্ট্রকাঠামো প্রতিষ্ঠায় আমরা সকলে কাজ করব।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন ও ড. ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির পক্ষ থেকে অংশ নেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা ও যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসেল।