দগ্ধ ৩২ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২১ জুলাই, ২০২৫, ২:২৫
দগ্ধ ৩২ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট

ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ‘এফ-৭ বিজিআই’ বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ ৩২ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।

তালিকা অনুযায়ী, দগ্ধদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর, যাদের বয়স ১০ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এরা হলেন—নাফিস, শামিম, শায়ান ইউসুফ, মাহিয়া, আফনান ও সামিয়া।

তাদের মধ্যে নাফিসের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। বাকি পাঁচজনের দগ্ধ হওয়ার মাত্রা উল্লেখ করা হয়নি, তবে আইসিইউতে থাকায় তাদের অবস্থা গুরুতর বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

তালিকার বাকি ২৬ জনের মধ্যে এরিকসন ও মেহরিনের শরীর শতভাগ দগ্ধ হয়েছে। এছাড়া ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে ১৩ বছর বয়সী নাজিয়া ও মাহতাবের।

১৫ বছর বয়সী মাকিনের দগ্ধ হয়েছে ৬২ শতাংশ। ৬০ শতাংশ করে দগ্ধ হয়েছেন আয়ান (১৪) ও মাসুমা।

অন্যান্যদের মধ্যে তাসনিয়া (৩৫%), আরিয়ান (১১) – ৫৫%, আশরাফুল ইসলাম (১৫%), রোহান (৫০%), শ্রেয়া (৫%), কাব্য (২০%), ইউশা (৬%), রূপী বড়ুয়া (৬%) দগ্ধ হয়েছেন।

তাছাড়া, তাসমিয়া (৫%), জায়ানা (৮%), সাইবা (৮%), পায়েল (১০%), আবির (২০%), কাফি আহমেদ (১০%), মুনতাহা (৫%), আলবিনা (৫%) এবং নিলয়ের শরীরের ১৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

নওরিন ও মাসুকা নামে দুইজনের বয়স এবং দগ্ধ হওয়ার পরিমাণ তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি।

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছেন এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

তাদের তথ্য মতে, বিমানবাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ প্রশিক্ষণ বিমানটি সোমবার দুপুরে উড্ডয়নের ১২ মিনিট পর দুর্ঘটনায় পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে এতে আগুন ধরে যায়। চারদিক থেকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং আগুনের ভয়াবহতা বাড়তে থাকে।

ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, ঘটনার সময় ভবনে ক্লাস চলছিল। হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীরা বের হতে পারেনি। এতে অনেকেই দগ্ধ হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর আহত ও দগ্ধদের রিকশা, ঠেলাগাড়ি, এমনকি কাঁধে করেও সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। পরে তাদের এক ডজনের বেশি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা সিএমএইচ, কুর্মিটোলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, লুবনা জেনারেল হাসপাতালসহ আশপাশের হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে অধিকাংশ দগ্ধকে স্থানান্তর করা হয় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত ১৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আইএসপিআরের বরাতে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামও রয়েছেন।

বিধ্বস্তের কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।