নদী ভাঙনে ঝুঁকিতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০৮
নদী ভাঙনে ঝুঁকিতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট

মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের পর এবার ফেরিঘাটেও ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণেই এই ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।

ভাঙনের কারণে গত কয়েকদিনে ফেরি চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ইতিমধ্যে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ রাখতে হয়েছে। বর্তমানে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট দিয়ে সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস সচল রাখা হলেও শুক্রবার দুপুরে ৪ নম্বর ঘাটের হাই-লেভেল অংশেও ভাঙন শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি।

সূত্র জানায়, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৫টি ফেরিঘাট থাকলেও নিয়মিত ব্যবহার করা হতো তিনটি। এর বাইরে ১ ও ২ নম্বর ঘাট অকেজো অবস্থায় ছিল। গত ৫ আগস্ট লঞ্চঘাট ভেঙে যাওয়ার পর সেটিকে সরিয়ে নেওয়া হয় ২ নম্বর ফেরিঘাটে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সেখানেও ভাঙন শুরু হলে সেটি সরিয়ে ১ নম্বর ঘাটে নেওয়া হয়। এদিকে ১২ আগস্ট থেকে ৫ নম্বর ঘাট বন্ধ, আর শুক্রবার থেকে ৪ নম্বর ঘাটেও ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১০ গজ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এমনকি ৩ নম্বর ঘাটেও ফাটল দেখা দেওয়ায় বালুর বস্তা ফেলে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।

ফেরিঘাটগুলোর পাশাপাশি আশপাশের এলাকাতেও ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে ৫ নম্বর ঘাটের পাশে কয়েকটি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে আছে আরও শতাধিক বাড়ি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে কাটার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ নষ্ট হচ্ছে। এতে পানির স্রোত ঘূর্ণি তৈরি করে তীরবর্তী মাটি সরিয়ে নিচ্ছে, ফলে দ্রুত ভাঙন দেখা দিচ্ছে। তারা বলছেন, বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আব্দুস সালাম বলেন, “ভাঙনের কারণে ৫ নম্বর ঘাট বন্ধ রাখতে হয়েছিল। আজ শুক্রবার বালুর বস্তা ফেলে সেটি মেরামত করা হয়েছে। ৪ নম্বর ঘাটেও ফাটল ধরা পড়ায় মিড-লেভেলে পন্টুন বসিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা হয়েছে।”

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন জানান, পাটুরিয়া ঘাট রক্ষায় বিআইডব্লিউটিএকে অবহিত করা হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।