মিথ্যা তথ্য মোকাবেলায় মেটাকে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ২৫ জুন, ২০২৫, ৪:১৯
মিথ্যা তথ্য মোকাবেলায় মেটাকে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য এবং ঘৃণাপূর্ণ কনটেন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেটার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটা (মিথ্যা তথ্য) একটি বড় সমস্যা। এর মোকাবেলায় কার্যকর উপায় খুঁজে বের করতেই হবে।

বুধবার (২৫ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মেটার এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন মিলনার এবং সরকারি নীতি ব্যবস্থাপক রুজান সারোয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এখানে একটি ভুল বা মিথ্যা তথ্য গোটা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবেই এমনটি করে থাকে। ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমের সম্ভাবনা যেমন বিশাল, তেমনি নৈতিকতা হারালে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

সাইমন মিলনার জানান, মেটা মিথ্যা তথ্য ও ক্ষতিকর কনটেন্ট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে সামনে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা সহযোগিতা বাড়াতে চায়। গত কয়েকদিনে তারা সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও অধিকারকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের জন্য একটি নিবেদিত টিম রেখেছি।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়ব উপস্থিত ছিলেন। তিনি মেটাকে বাংলা ভাষায় দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। কারণ, মেটার এআই এবং এলএলএম এখনো মূলত ইংরেজি ভাষাভিত্তিক, যা স্থানীয় কনটেন্ট ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত নয়।

এর আগের দিন (মঙ্গলবার, ২৪ জুন) মেটার প্রতিনিধিরা আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মেটাকে বাংলা ভাষায় উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও এলএলএম বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় মানব পর্যালোচকের সংখ্যা বাড়ানো এবং স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি ও সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সম্যক ধারণাসম্পন্ন বাংলাদেশি কনটেন্ট রিভিউয়ার নিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া, বাংলাদেশে মেটার সেবার মান বাড়াতে ক্যাশ সার্ভার ও এজ রাউটার স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার অপটিমাইজ করা যায় এবং ব্যক্তিগত তথ্যের (PII) সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ পুলিশ ও বিটিআরসি প্রতিনিধিরা সামাজিক মাধ্যমে ক্ষতিকর কনটেন্ট দ্রুত সরানোর কার্যক্রম আরও জোরদার করার দাবি জানান। তারা হুমকি ও অপরাধ শনাক্তকরণ, মিথ্যা তথ্য প্রচারে সতর্কতা, জনরোষ বা সহিংসতা প্রতিরোধ, এমনকি আত্মহত্যার আগাম সতর্কতার মতো বিষয়ে মেটার কাছ থেকে আরও দ্রুত ও কার্যকর সাড়া চেয়েছেন।