ড্রোন হামলায় উলফার তিন শীর্ষ নেতা নিহত, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্বীকার

ভারতের সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলায় মিয়ানমারে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)-এর তিন শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিদ্রোহী সংগঠনটি। রোববার একাধিক বিবৃতিতে সংগঠনটি দাবি করে, ভোররাতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তরে হামলা চালানো হয়। এতে ১৯ জন নিহত এবং ১৯ জন আহত হয়েছেন।
উলফা জানায়, ড্রোন হামলাটি নাগাল্যান্ডের লংওয়া থেকে অরুণাচলের পাংসাই পাস পর্যন্ত বিস্তৃত কয়েকটি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। হামলাগুলো রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে সংঘটিত হয়।
সংগঠনটির দাবি, ওই হামলায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল নয়ন মেদ্দি, ব্রিগেডিয়ার গনেশ আসম এবং কর্নেল প্রদীপ আসম নিহত হয়েছেন।
তবে ভারতের সেনাবাহিনী এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। সেনাবাহিনীর গুয়াহাটিভিত্তিক মুখপাত্র কর্নেল এম.এস. রাওয়াত বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এমন কোনো অভিযানের তথ্য নেই।
উলফা আরও দাবি করেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী হামলায় ইসরায়েলি ও ফরাসি ড্রোন ব্যবহার করেছে। যদিও এনডিটিভির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত ফরাসি ড্রোন ব্যবহার করে না।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে, আসামের পুলিশ বা আসামের ভূখণ্ড থেকে কোনো হামলা চালানো হয়নি।
১৯৭৯ সাল থেকে আসামের স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে উলফা। ১৯৯০ সালে সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। এরপর বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে অন্তত ১৮ হাজার মানুষের।
একসময় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র চাপে উলফার বহু নেতা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে উলফার ঘাঁটিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। এ সময় চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া, শশধর চৌধুরী, চিত্রবন হাজারিকা ও রাজু বড়ুয়াসহ অনেক নেতাকে আটক করে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০১৫ সালে বাংলাদেশে আটক উলফার অন্যতম নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তিনিও ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেন।
দীর্ঘ আলোচনার পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে উলফার একাংশ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসাম সরকারের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে সংগঠনের কট্টরপন্থী অংশ, যেটির নেতৃত্বে রয়েছেন পরেশ বড়ুয়া, সেই চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে এখনো সশস্ত্র অবস্থানে রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন