আর্টিলারি থেকে গ্রেনেড লাঞ্চার, সব অস্ত্রেই শূন্য শুল্কের প্রস্তাব

বিশেষ প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২ জুন, ২০২৫, ৩:৪৩
আর্টিলারি থেকে গ্রেনেড লাঞ্চার, সব অস্ত্রেই শূন্য শুল্কের প্রস্তাব

প্রতীকী ছবি।

প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১১০টি পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিস্ময়করভাবে এর তালিকায় রয়েছে আর্টিলারি উইপন্স বা যুদ্ধাস্ত্রও।

এই যুদ্ধাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বন্দুক, হাওইটজার (একধরনের কামান), মর্টার, রকেট লাঞ্চার, ফ্লেইম থ্রোয়ার, গ্রেনেড লাঞ্চার, টর্পেডো টিউবসহ ভারী ও ধ্বংসাত্মক অস্ত্রশস্ত্র। এসব পণ্যের ওপর বর্তমানে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক রয়েছে, যা প্রস্তাবিত বাজেটে শূন্য শতাংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

শুল্ক মওকুফের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন বাণিজ্য সংলাপকে কেন্দ্র করেই নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজেট সূত্র। ৬২৬টি পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড়ের অংশ হিসেবেই যুদ্ধাস্ত্রের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব এসেছে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় বলেন,

  আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর হার পর্যায়ক্রমে হ্রাস করা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর (USTR)-এর তথ্যমতে, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, তার চেয়ে অনেক কম পণ্য রপ্তানি করে।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নীতির আওতায় শতাধিক দেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের রপ্তানি ঝুঁকির মুখে পড়ে। এতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক যুক্ত হওয়ায় মোট শুল্কহার দাঁড়ায় ৫২ শতাংশে। যা এতদিন ছিল ১৫ শতাংশ।

ট্রাম্প চলতি বছরের ২ এপ্রিল নতুন শুল্কহার তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখলেও ইতোমধ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে, যা আগের ১৫ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।

এই বাড়তি শুল্ক চাপ এড়াতে এবং বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন চেষ্টার অংশ হিসেবেই এমন শুল্ক ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় বাজার। ২০২৪ সালে দেশটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে, যার মধ্যে ৭৩৪ কোটি ডলারই তৈরি পোশাক।