গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার

ফিরোজা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জাতীয় ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বক্তব্যের শুরুতেই খালেদা জিয়া স্মরণ করেন রক্তস্নাত সেই জুলাই-আগস্টের দিনগুলো। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেপ্তার, খুনের মাধ্যমে এই দেশ থেকে গণতন্ত্রকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। কিন্তু ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে, আর নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের দ্রুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে। এই বীরদের রক্ত ও মায়েদের অশ্রু যেন বৃথা না যায় তা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। ঐক্য বজায় রেখে শহীদ জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন ও কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, যারা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রণয়ন করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে এবং প্রতিটি পরিবারকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা ও শহীদদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিকেল ৩টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য পর্ব শেষে রাত ৭টা ৫০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল আবেগ, শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞার এক অনন্য আবহ।
আপনার মতামত লিখুন