২০২৬ সালের এপ্রিলেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, “নির্বাচন কবে হবে—এ নিয়ে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে প্রবল আগ্রহ রয়েছে। আমি আগেও বলেছি, নির্বাচন ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬-এর মধ্যে হবে। এই সময়ের মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ বারবার সংকটে পতিত হয়েছে, যার মূল কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন। বারবার সেই নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ফ্যাসিবাদী রূপ নিয়েছিল। এমন নির্বাচন যারা আয়োজন করে, তারা জাতির কাছে অপরাধী। ক্ষমতায় আসা দলগুলোও হয় জনগণের ঘৃণার পাত্র।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচনের আয়োজন করা—যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো সংকট তৈরি না হয়। এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে, গণআন্দোলনে আত্মত্যাগ করা ছাত্র-জনতার স্বপ্ন বৃথা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা তিনটি মৌলিক ম্যান্ডেট—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আশা করি আগামী রোজার ঈদের মধ্যেই সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়ায় একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে পারব। বিশেষত, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের দায়বোধ বাস্তব রূপ পাবে।”
ড. ইউনূস বলেন, “চলমান সংস্কার কার্যক্রমের পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীকে জানাচ্ছি, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আলোকে নির্বাচন কমিশন সময়মতো নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে। সবচেয়ে বেশি ভোটার, সবচেয়ে বেশি দল ও প্রার্থীর অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক—এই আমাদের লক্ষ্য।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেড় যুগ পর দেশে একটি সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠিত হবে। বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী এবার প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে। আমরা জাতির কাছে অঙ্গীকার করছি, এই নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।”
আপনার মতামত লিখুন