বিজিএমইএর নেতৃত্বে ফের ফোরাম, ভরাডুবি সম্মিলিত পরিষদের

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ৩১ মে, ২০২৫, ৫:৫৯
বিজিএমইএর নেতৃত্বে ফের ফোরাম, ভরাডুবি সম্মিলিত পরিষদের

বিজিএমইএ নির্বাচনের ফল ঘোষণা।

নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও নেতৃত্বে এসেছে বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম। ২০২৫-২৭ মেয়াদের এই নির্বাচনে ঢাকা অঞ্চলের ২৬টি পরিচালক পদের মধ্যে ২৫টি এবং চট্টগ্রামের নয়টি পদের মধ্যে ছয়টিতে জয় পেয়েছে তারা। সব মিলিয়ে ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ৩১টিতে ফোরামের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। বাকি চারটি পদ পেয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। এই জয়ের ফলে বিজিএমইএর পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন ফোরাম প্যানেলের নেতা ও রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান (বাবু)।

শনিবার (৩১ মে) ঢাকার রেডিসন ব্লু হোটেল এবং চট্টগ্রামে একই হোটেলে সকাল ৮টা থেকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। পরে রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৭৬ জন প্রার্থী। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন এক হাজার ৮৬৪ জন পোশাক মালিক। নির্বাচনে মূলত দুটি বড় জোট—ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ অংশ নেয়। এছাড়া ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়ে নেতৃত্বে আসছে যে ফোরাম, তার নেতৃত্বে ছিলেন মাহমুদ হাসান খান (বাবু)। অন্যদিকে সম্মিলিত পরিষদের নেতৃত্ব দিয়েছেন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম। ফোরাম এবার ক্ষমতায় এলেও গতবার ২০২৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৩৫টির সব কটি পদে জয় পেয়েছিল সম্মিলিত পরিষদ।

সেই নির্বাচনের পর দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে বিজিএমইএতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বিজিএমইএর তৎকালীন সভাপতি আব্দুল মান্নান কচি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান। এরপর ডিজাইনটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু পোশাক খাতে সৃষ্ট অস্থিরতা মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায় ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে বিজিএমইএর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

সেই অস্থির সময়ের পর নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে বিজিএমইএ আবারও নির্বাচিত নেতৃত্ব পেল। আগামী ২ জুন নবনির্বাচিত পরিচালকরা ভোট দিয়ে সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত করবেন। ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট, সংগঠনের নেতৃত্ব রাজনীতিমুক্ত, পেশাদার ও ব্যবসাবান্ধব হাতে ফিরেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে নতুন বোর্ডের কাছে পোশাক খাত সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা অনেক। বিশেষ করে, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে রপ্তানিমুখী এই খাতকে স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এবার তাদের কাঁধে।